হুবার্ট হোরাতিও হামফ্রে জুনিয়র একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ যিনি ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮ তম উপরাষ্ট্রপতি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি একজন ফার্মাসিস্ট ছিলেন ।
হামফ্রে ১৯১১ সালের ২৭ মে দক্ষিণ ডাকোটা ওয়ালেসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি নরওয়েজিয়ান অভিবাসী রাগনিল্ড ক্রিস্টিন সানেস এবং হুবার্ট হোরাতিও হামফ্রে সিনিয়রের সন্তান। হামফ্রে তার যৌবনের বেশিরভাগ সময় দক্ষিণ ডকোটার ডোল্যান্ডে ডাকোটা প্রাইরিতে কাটিয়েছিলেন; শহরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৬০০।
তাঁর বাবা হামফ্রে সিনিয়র ছিলেন লাইসেন্সধারী ফার্মাসিস্ট এবং ব্যাবসায়ি । যিনি মেয়র ও শহরের নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের সদস্যও ছিলেন; তিনি দক্ষিণ ডাকোটা রাজ্য আইনসভায়ও কিছু সময় দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ১৯৪৪ এবং ১৯৪৮ সালের গণতান্ত্রিক জাতীয় সম্মেলনে দক্ষিণ ডাকোটা প্রতিনিধি ছিলেন।
ছবিঃ হুবার্ট হোরাতিও হামফ্রে জুনিয়র
১৯২০ সালের শেষের দিকে, ডোল্যান্ডের মারাত্মক অর্থনৈতিক মন্দা আঘাত হানে; শহরের উভয় তীর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং হামফ্রের বাবা তাঁর দোকানটি খোলা রাখতে অনেক চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে উঠেনি ।
হামফ্রে ডোল্যান্ডের উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করার পর ,পিতা হুবার্ট সিনিয়র ডোল্যান্ড ছেড়ে দক্ষিণ ডাকোটার বড় শহর হুরনে একটি নতুন ড্রাগ স্টোর খোলেন, যেখানে তিনি তার ভাগ্য উন্নতির আশা করেছিলেন।ভর্তি হয়েও পরিবারের আর্থিক লড়াইয়ের কারণে হামফ্রিকে মাত্র এক বছর পর মেনিসোতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয়েছিল। তিনি কলোরাডোর ডেনভারের ক্যাপিটল কলেজ অফ ফার্মাসি থেকে ফার্মাসিস্টের লাইসেন্স অর্জন করেছেন (মাত্র ছয় মাসের মধ্যে দুই বছরের লাইসেন্স প্রোগ্রাম শেষ করে), এবং তার পিতার সাথে ১৯৩১ থেকে ১৯৯৩৭ পর্যন্ত ড্রাগ স্টোর পরিচালনা করেছিলেন।
পিতা এবং পুত্র উভয়ই গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন উপায় আবিষ্কার ছিলেন: ” তারা শূকর এবং মানুষের জন্য পেটেন্ট ওষুধ তৈরি করতেন। সে সময় মানুষের জন্য ওষুধ উৎপাদন করা স্বাভাবিক হলেও শূকরের জন্য ওষুধ তৈরি করা এটা স্বাভাবিক ছিল না। তাই তারা ওষুধের দোকানে কাঠের শূকর তৈরি করে চিহ্ন আকারে দোকানের সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছিল ।যাতে করে এই অস্বাভাবিক পরিষেবা সম্পর্কে জনসাধারণ জানতে পারে । ঐ অঞ্চলের কৃষকরা বিষয়টি জানতে পেয়েছিলেন এবং তারপর দোকানটি কৃষকের ওষুধের দোকান হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিল।
তারা শুকরের জন্য মিনারেল সাপ্লিমেন্ট তৈরি করত যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘হামফ্রেসবিটিভি’ (বডি টোন ভেটেরিনারি) সেই সাথে মানুষের জন্য বিভিন্ন ওষুধ উৎপাদন করা শুরু করেছিল । সময়ের সাথে সাথে হামফ্রের ড্রাগ স্টোরটি একটি লাভজনক উদ্যোগে পরিণত হয়েছিল এবং পরিবারটি আবার সমৃদ্ধ হয়েছিল।
ছবিঃ হুবার্ট হোরাতিও হামফ্রে জুনিয়র
আর্থিক দৈন্যতা কাটিয়ে উঠার পর ১৯৩৭ সালের আগস্টে হামফ্রে আবার মেনিসোঁতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান এবং ১৯৩৯ সালে ব্যাচেলর অফ আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর আর কিছু ডিগ্রি অর্জন করে কিছুদিন অধ্যাপনা করেন এবং পরবর্তীতে প্রত্যক্ষ রাজনীতি শুরু করেন।
১৯৪৮ সালে হামফ্রে ইউএস সিনেটে নির্বাচিত হন। সিনেটর হিসাবে তাঁর প্রথম বিলটি ছিল সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বয়স্কদের স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচির জন্য। হামফ্রে মার্কিনীদের সামাজিক সুরক্ষার সম্প্রসারণের জন্য কাজ করেছেন এবং তিনি office of aging এবং National Commission on Aging গঠনের তদারকি করেছিলেন। কর্মক্ষেত্রে বয়স বৈষম্যের উপর নিষেধাজ্ঞার তুলে নেয়ার জন্যও তিনি কাজ করেছেন।
মিনেসোটার ওয়েভারলি শহরে ১৯৭৮ সালের ১৩ জানুয়ারি মূত্রাশয় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।
অনুপ্রেরণা পেলাম
অনুপ্রেরণা পেলাম , আসলে যারা করতে পারে সবই পারে