অ্যাজট্রিওনাম (Aztreonam)

অ্যাজট্রিওনাম (Aztreonam) বা এসট্রিয়োনাম একটি অ্যান্টিবায়োটিক যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ওষুধটি  ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করার মাধ্যমে কাজ করে থাকে । এটি ব্যাকটেরিয়ার সেল ওয়াল সিন্থেসিস করতে বাধা দেয় ।

অ্যাজট্রেওনাম ১৯৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। এটি ২০১৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

নির্দেশনা: নিচে উল্লেখিত এ্যারোবিক, গ্রাম নেগেটিভ জীবাণু দ্বারা সংঘটিত সসংক্রমনের ক্ষেত্রে অ্যাজট্রিওনাম ব্যবহার করা যেতে পারে।
মূত্রনালীর সংক্রমনের ক্ষেত্রে পাইলোনেফ্রাইটিস, সিসটাইটিস (একিউট ও ক্রনিক) এবং এসিমটোমেটিক ব্যাকটেরিয়া (এমাইনোগ্লাইকোসাইড,সেফালোস্পোরিন অথবা পেনিসিলিন প্রতিরোধক জীবাণুর ক্ষেত্রে)।

গনোরিয়া: তীব্র, অজটিল ইউরোজেনিটাল অথবাএনোরেকটাল সংক্রমনের ক্ষেত্রে।
 শ্বসনতন্ত্রের সংক্রমণ: নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, সিস্টিক ফিব্রোসিস ইত্যাদি শ্বসনতন্ত্রের সংক্রমণ সমূহে।
ত্বক এবং ত্বকীয় কলার সংক্রমণ: অস্ত্রোপচারজনিত ক্ষত, আলসার এবং আগুনে পোড়ার ফলে সৃষ্ট ক্ষত এর ক্ষেত্রে।
গাইনোকোলজিকাল সংক্রমণ: পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ (পিআইডি), এন্ডোমেট্রাইটিস এবং পেলভিক সেলুলাইটিস।
ইন্ট্রা-এবডোমিনাল সংক্রমণ: পেরিটোনাইটিস।

ব্যাকটেরিমিয়া/ সেপটিসেমিয়া: ই-কোলি, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, সিউডোমোনাস ওরিজিনোসা, প্রোটিয়াস মিরাবিলিস, সিরাশিয়া মারসিশেনস এবং এন্টেরোব্যাকটার প্রভৃতি প্রজাতি দ্বারা সংক্রমণ সেপটিসেমিয়ার ক্ষেত্রে।
অস্থি এবং অস্থিসন্ধির সংক্রমণ: অস্টিওমাইলাইটিস, সেপটিক আথ্রাইটিস।
অ্যাজট্রিওনাম অস্ত্রোপচারের ফলে সংক্রমিত জীবানু দ্বারা গঠিত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সহযোগী ওষুধ হিসেবে কার্যকর।
সিউডোমোনাস সংক্রমণ এ আক্রান্ত জটিল রোগীদের ক্ষেত্রে অ্যাজট্রিওনাম এবং এমাইনোগ্লাইকোসাইড একত্রে ব্যবহার করলে সিনারজিস্টিক ফল পাওয়া যায়।

প্রতিনির্দেশনা: অ্যাজট্রিওনাম অথবা এর কোন উপাদান এর প্রতি অতিসংবেদনশীল রোগীদের ক্ষেত্রে এটি প্রতিনির্দেশিত।

পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া : অ্যাজট্রিওনাম সাধারণত সুসহনীয়। ক্লিনিক্যাল স্টাডি সমূহে নিম্নোক্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সমূহ পাওয়া গিয়েছে ।

অতিসংবদনশীল (হাইপার সেনসিটিভ রিএকশন) এনাফাইলেক্সিস, এনজিওইডিমা,
ব্রঙ্কোস্পাজম।
ডারমাটোলজিঃ র‌্যাশ, প্রুরিটাস, প্যাটেচি, পুরপুরা, ডায়াফোরেসিস, ফ্লাশিং, আর্টিকারিয়া, ইরাইথ্রেমা মাল্টিফোর্মি, টক্সিক এপিডর্মাল ন্যাক্রলাইসিস,এক্সফোলিয়েটিভ ডার্মাটাইটিস।
হেমাটোলজিকঃ ইসিনোফিলিয়া, প্রোথ্রম্বিনএবং পারশিয়াল থ্রম্বোপ্লাসটিনের সময় বৃদ্ধি, থ্রম্বোসাইটোসিস, থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া, লিউকোসাইটোসিস, নিউট্রোপেনিয়া, অ্যানিমিয়া, পেনসাইটোপেনিয়া।
হেপাটোবিলিয়ারিঃ হেপাটিক ট্রান্স-এমাইনেজ এবং অ্যালকালাইন ফসফেটেস্ এর মাত্রার সাময়িক বৃদ্ধি।
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনালঃ ডায়রিয়া, বমি-বমিভাব, বমি, পেটের মাংসপেশীতে টান, মুখের আলসার এবং স্বাদের পরিবর্তন। শিশুদের ক্ষেত্রে পাকস্থলীর সমস্যা দেখা দিতে পারে। খুবই কম ক্ষেত্রে সি. ডিফিসিলি জনিত ডায়রিয়া, সিউডোমেমব্রেনাস কোলাইটিস অথবা পরিপাকতন্ত্রের রক্তপাতের তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
বৃক্কীয়ঃ সুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অ্যাজট্রিওনাম বৃক্কের কার্যকারিতার পরিবর্তন ঘটায় না।
স্থানীয় প্রতিক্রিয়া: আইভি ইঞ্জেক্শন প্রয়োগের স্থানে অস্বস্থিভাব এবং ফ্লেবাইটিস হতে পারে। আইএম ইঞ্জেক্শন প্রয়োগের স্থানে কিছুটা অস্বস্তিভাব হতে
পারে।
মিশ্রঃ নিম্নোক্ত প্রতিক্রিয়া খুবই কম দেখা যায় ভ্যাজাইনাইটিস, ক্যানডিডিয়াসিস, হাইপোটেনশন, মৃগী, দূর্বলতা, পেরাসথেসিয়া, দ্বিধা, ঝিমুনি, মাথাঘোরা, নির্ঘূমতা, টিনিটাস্, মাথাব্যথা, ব্রেস্ট টেন্ডারনেস্, স্বাদের পরিবর্তন, মাংস পেশিতে টান, জ্বর, অস্বস্তি, হাঁচি এবং নাসারন্ধ্র বন্ধ হওয়া।
অন্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া: প্রবেনিসিড অথবা ফিউরোসেমাইড।

গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে ব্যবহার
গর্ভাবস্থায় প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরি-বি। অ্যাজট্রিওনাম প্লাসেন্টা অতিক্রম করে ভ্রূণের রক্ত সঞ্চালনে প্রবেশ করে। তাই ফিটাসের ক্ষতির তুলনায় মায়ের সুস্থতার অধিক নিশ্চয়তা যুক্তিসংগত হলেই কেবল অ্যাজট্রিওনাম ব্যবহার করা যেতে পারে।

স্তন্যদানকালে মায়ের সেরামে প্রাপ্ত অ্যাজট্রিওনাম এর ঘণমাত্রার ১% এর ও কম মাত্রায় মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয়। তাই অ্যাজট্রিওনাম ব্যবহারের সময় স্তন্যদান করা থেকে সাময়িক বিরতি নিতে হতে পারে।

শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার:১ সপ্তাহ বা তার চেয়ে বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে অ্যাজট্রিওনাম নির্দেশিত। স্বাভাবিক বৃক্কীয় ক্ষমতা সম্পন্ন শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যাজট্রিওনা আইভি ইঞ্জেক্শন প্রয়োগ করতে হবে। শিশুদের মাংসপেশিতে প্রয়োগের ব্যাপারে অথবা বৃক্কের সমস্যাজনিত শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের পর্যাপ্ত তথ্য
পাওয়া যায়নি।
বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার: বয়স্কদের ক্ষেত্রে বৃক্কীয় কার্যক্ষমতার উপর নির্ভর করে মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্স এর মাত্রার উপর নির্ভর করে অ্যাজট্রিওনাম এর মাত্রা নির্ণয় করা যেতে পারে।

 

[su_box title=”সতর্কীকরণ” style=”bubbles” box_color=”#f4f1f1″ title_color=”#f00f0f”]ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত তথ্য শুধু মাত্র মৌলিক ধারনা হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু কোনভাবেই তা আপনার প্রকৃত চিকিৎসা নয়। ওষুধ গ্রহনের পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।[/su_box]

One thought on “অ্যাজট্রিওনাম (Aztreonam)

Leave a Reply to Allenneivy Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *