গত শতাব্দীর প্রায় মাঝামাঝিতে সোভিয়েত জোটের ক্ষমতা হ্রাস করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গঠন করে সাউথইস্ট এশিয়া ট্রিটি অর্গানাইজেশন (South- East Asia Treaty Organization) সিয়াটো। ঠিক একই সময় মার্কিন সেনা সদস্যরা ভিয়েতনামের যুদ্ধে অংশ নিচ্ছিল । এই অবস্থায় মার্কিন সৈন্যদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়ে ,
সংস্থাটি ১৯৬৩ সালে চাঁদপুরের মতলবে একটি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে ।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে যুক্তি সংগত কারণেই ধীর হয়ে যায় সংস্থার কার্যক্রম। এর বেশ কয়েক বছর পর ১৯৭৮ সালে, দেশ বিদেশের কয়েকজন উদ্যোগী বিজ্ঞানী “কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরিকে” একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তরের জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করে, সরকার আবেদনে সাড়া দেয় এবং জাতীয় সংসদে একটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে সংস্থাটির নতুন নাম দেয়া হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ’ সংক্ষেপে যাকে বলা হচ্ছে আইসিডিডিআর, বি ।
১৯৬৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত, মতলবে কলেরা রোগের বিভিন্ন টিকার কার্যকারিতার উপর ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, সেই সাথে ঔষধ, পুষ্টি এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উপরও গবেষণা পরিচালিত হয়। মতলবে স্থাপিত হেলথ্ এন্ড ডেমোগ্রাফিক সার্ভিল্যান্স সিস্টেমটি বর্তমানে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মাঝে বহুল আলোচিত ও বিখ্যাত একটি মডেল ৷ এটি উন্নয়নশীল বিশ্বের সবচেয়ে পুরানো দীর্ঘমেয়াদী (longitudinal) সার্ভিল্যান্স সিস্টেম ৷ এর মাধ্যমে শিশু ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির অনেক মৌলিক ধারণা আবিষ্কৃত হয়েছে ৷
ফলে মতলব অঞ্চল বিশ্বভিত্তিক কর্মসূচীর গবেষণা ও কর্ম-এলাকা হিসেবে সমাদৃত হয়ে আসছে ৷ নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া চিকিৎসায় জিংকের উদ্ভাবনও এ কেন্দ্রের গবেষণা কর্মের আরও একটি মাইলফলক ৷ ডেঙ্গু, নিপা, সার্স এর মত সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধে ,আইসিডিডিআরবি মতলব রিসার্চ সেন্টার – বাংলাদেশ সরকারকে অব্যাহত সহায়তা প্রদান করে আসছে ৷ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ও মতলবস্থ হাসপাতাল/ক্লিনিকের মাধ্যমে বছরে দেড় লক্ষাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে ৷