ড্রাগ লাইসেন্স

মানব জীবনে ওষুধ ও পথ্যের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে৷ আমরা প্রতিনিয়তই নানা রকম রোগে আক্রান্ত হই সাথে আমাদের ঔষধ নির্ভরতা দিন দিনই বাড়ছে৷ আর সেই ঔষধ কিনতে আমাদের কোন মেডিসিন শপ বা ওষুধের দোকানে যেতে হয়৷ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অনেক মানুষ ওষুধের ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। দোকান বা ফার্মেসী চালু করে বৈধভাবে ওষুধের ব্যবসা করতে চাইলে অবশ্যই ড্রাগ লাইসেন্স থাকতে হবে। ড্রাগ লাইসেন্সের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। মূলত এই ঔষধ প্রশাসন থেকে ড্রাগ লাইসেন্স নিতে হয়।

ছবি : ফরম ৭

খুচরা বিক্রির জন্য এলোপ্যাথিক / আয়ুর্বেদিক /ইউনানী /হোমিওপ্যাথিক ড্রাগ লাইসেন্স নিতে হলে ঔষধ প্রশাসনের নির্ধারিত ফরম-৭ (বেঙ্গল ড্রাগ রুল ১৯৪৬ এ উল্লেখিত) এর মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। ফরম টি সঠিকভাবে পূরন করে সাথে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কি কি কাগজপত্র জমা দিতে হবে ফরমের সাথে? চলুন দেখে নেয়া যাক

১. মালিকের ব্যাংক স্বচ্ছলতার সনদপত্র ( ব্যাংক সল্ভেন্সি সার্টিফিকেট)।
২. লাইসেন্স ফি জমা দেয়ার ট্রেজারী চালানের মুল কপি।
৩. দোকান ভাড়ার রসিদ বা চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। নিজস্ব দোকান হলে দলিলের ফটোকপি।
৪. নিয়োজিত ফার্মাসিস্ট/কবিরাজ/হাকিম/হোমিও ডাক্তারের অঙ্গীকারনামা।
৫. পৌর এলাকার ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটো কপি।
৬. নিয়োজিত ফার্মাসিস্ট/কবিরাজ/হাকিম/হোমিও ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন সনদের মুল কপি ও সত্যায়িত ফটোকপি
৭. মালিকের নাগরিকত্ব সনদের সত্যায়িত ফটোকপি / ভোটার আই.ডি কার্ডের ফটোকপি ।

মডেল ফার্মেসী বা মডেল মেডিসিন শপের ক্ষেত্রে এ গ্রেড ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে । দোকানের সাইজ কমপক্ষে ৩০০ বর্গফুট হতে হবে।মেডিসিন শপের ক্ষেত্রে বি বা সি গ্রেড দোকানের সাইজ কমপক্ষে ১২০ বর্গফুট হতে হবে ।এর সাথে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (টি.আই.এন) সনদপত্রের ফটোকপিও প্রয়োজন হতে পারে ।

এবার চলুন বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা যাক, প্রথমেই ব্যাংক সচ্ছলতার সনদপত্র, আপনাকে ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট অার্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এর লাইসেন্স ফি জমা দেবার ট্রেজারী চালান আপনি যেখানে জমা দেয়া হয় সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

ভাড়া দোকানের ক্ষেত্রে, দোকান ভাড়ার রশিদ দোকানের মুল মালিকের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে৷ আর নিজস্ব দোকানের জন্য দলিলের ফটোকপি হলেই হবে৷

ফার্মাসিস্টের সনদের (সি গ্রেড কোর্সের) জন্য ফার্মেসী কাউন্সিল থেকে আপনাকে তিন মাস মেয়াদী একটি কোর্স করতে হবে যাকে ফার্মেসি ফাউন্ডেশন কোর্স ও বলা হয়। প্রতি তিন মাস পর পর ঔষধ প্রশাসনের নিয়মিত সভা হয়, যেখানে তথ্যগুলো সার্বিক যাচাই বাছাই সাপেক্ষে ড্রাগ লাইসেন্স প্রদান করা হয়।

লাইসেন্স ফি ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হয়। চলুন এবার দেখি লাইসেন্স ফি কত ?

পৌরসভা বা মেট্রোপলিটন এলাকায়  পৌর এলাকার বাইরে ( ইউনিয়ন কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত এলাকায় )
এলোপ্যাথিক ২৫০০/= ১৫০০/=
আয়ুর্বেদিক

ইউনানী

হোমিওপ্যাথিক

বায়োকেমিক 

হারবাল

২০০০/=  ১০০০/=

ছক : লাইসেন্স ফি’র তালিকা (পরিবর্তিত হতে পারে ) 

নতুন লাইসেন্স নিতে হলে সাধারণত একটু দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, এই প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোটামুটি দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে যাচাই বাছাইয়ের জন্য। আর ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করতে হলে জন্য পাঁচ থেকে সাত কর্ম দিবস অপেক্ষা করতে হয়।

এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।
ঔষধ প্রশাসন, ১০৫-১০৬, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০।
টেলিফোন: ৮৮০-২-৯৫৫৬১২৬, ৯৫৫৩৪৫৬
ফ্যাক্স: ৮৮০-২-৯৫৬৮১৬৬
ই-মেইল:drugs@citech.net

 

drug licenseঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকবিরাজট্রেড লাইসেন্সড্রাগ লাইসেন্সফার্মাসিস্টফার্মেসীবেঙ্গল ড্রাগ রুলহাকিমহোমিও ডাক্তার
Comments (০)
Add Comment