বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের ৫০ বছর

মোঃ রশিদুর রহমান
ত ৫০ বছরে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প এক অভুতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে! স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো একচেটিয়াভাবে বাজার দখল করে ছিল।
১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধ নীতির বাস্তবায়ন হওয়ার পর দেশীয় ওষুধশিল্পের বিকাশ শুরু হয়।১৯৮২ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৬ শতাংশ ওষুধ দেশে তৈরি হতো। বাকী ৮৪ শতাংশ ওষুধ বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। এখন দেশীয় চাহিদার প্রায় ৯৭ শতাংশ ওষুধ দেশেই তৈরি হচ্ছে। এমনকি উৎপাদিত ওষুধের ৯০ শতাংশ দেশীয় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো উৎপাদন করছে।
গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টরাই মূলত বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের সফলতার নেপথ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আর এর সাথে যুক্ত ছিল কেমিস্ট, বায়োকেমিস্ট, বায়োটেকনোলজিস্ট, ইঞ্জিনিয়ার এবং ডাক্তারগণ।যাদের নিরলস চেষ্টা এবং কর্ম স্পৃহা ওষুধখাতকে বহুদূর নিয়ে এসেছে।
দেশীয় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো মূলত ফিনিশড প্রোডাক্ট উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু ফিনিশড প্রোডাক্টের জন্য যে কাঁচামালের দরকার হয় তার প্রায় ৯৬ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। কারণ হাতেগোণা কয়েকটি কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়। এখন কাঁচামালের পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার সময় এসেছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় এপিআই শিল্পপার্ক এর কাজ অতিদ্রুত শেষ করে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে কাঁচামালের উৎপাদন শুরু করতে হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে ২৫৭ টি নিবন্ধিত ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালস মার্কেট ৬ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। এখন পোশাক শিল্পের পরেই ওষুধশিল্প অবস্থান করছে।
দেশের চাহিদা মিটিয়ে ১০০ এর বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে। এমনকি একটি দেশীয় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি কেনিয়াতে অপারেশনাল ইউনিট চালু করেছে। ফলে দেশীয় কোম্পানি বহুজাতিকের তকমা পাচ্ছে যা বাংলাদেশীদের জন্য গর্বের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আশা করি ভবিষ্যতে আরও সাফাল্য বাংলাদেশের ওষুধশিল্পকে সুসমৃদ্ধ করবে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ফার্মেসী বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।           
              পিএইচডি গবেষক, কিউশু বিশ্ববিদ্যালয় , জাপান ।
ওষুধশিল্পবাংলাদেশের ওষুধশিল্প
Comments (০)
Add Comment