এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানী লিমিটেড (ইডিসিএল) বাংলাদেশের একটি সম্পূর্ণ রাষ্ট্র মালিকানাধীন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান । দেশের সব সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বিনামূল্যে প্রায় সব ধরনের ঔষধ জনগণের মাঝে বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড প্রায় ৭২ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে ।
১৯৬২ সালে এটি সরকারি ফার্মাসিউটিক্যালস ল্যাবরেটেরি (জিপিএল) নামে কেন্দ্রীয় সরকাররে অধীনে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠান টি । পরর্বতীকালে ১৯৭৯ সালে নাম পরিবর্তন করে ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদন ইউনিট (পিপিইউ) করা হয়।
কোম্পানি আইনের অধীনে ১৯৮৩ সালে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে থাকে । স্থানীয় ভাবে ঔষধ উৎপাদনের জন্য দেশে একটি উন্নত ওষুধ শিল্প স্থাপনের প্রধান উদ্দেশ্যে এবং রপ্তানরি জন্য আবারো নাম পরিবর্তন করে ১৯৮৩ সালে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানী লিমিটেড রাখা হয়।
সরকারী এই ঔষধ কোম্পানী বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে । বর্তমানে কোম্পানীর অনুমোদিত মুলধন ২০০.০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০০.৯২ কোটি টাকা।
এর প্রধান উদ্দেশ্য উন্নতমানের ঔষধ উৎপাদন করে সাশ্রয়ী মূল্যে সরকারি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা। কোম্পানীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত উৎপাদিত ঔষধ সরকারি হাসপাতাল, সিভিল র্সাজন অফিস, সরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি এবং আর্ন্তজাতিক (অমুনাফা কারি) প্রতিষ্ঠান যেমন,ইউনিসেফ,বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আইসিডিডিআরবি ইত্যাদিতে ঔষধ সরবরাহ করছে।
কোম্পানিটি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রায় ৪২৬.০০ কোটি টাকার বিভিন্ন ড্রাগস ও গর্ভনিরোধক পণ্য উৎপাদন করেছে। এর বর্তমান জনবল আনুমানিক ২৬০০। জাপানি গ্রান্ট এর মাধ্যমে ১৯৮৫ সালে বগুড়াতে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানী লিমিটেড নামে আরো একটি প্লান্ট চালু হয়।
এটি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, সিভিল র্সাজন অফিস, সরকারী স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা সমুহে প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করে আসছে। সেফালস্পরিন প্রকল্প- এটি বগুড়ার অন্য একটি ইউনিট প্রতি ঘন্টায় ১৮০০ ভায়াল উৎপাদন করছে ।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার খুলনায় কেই এল পি (খুলনা এসেনসিয়াল লেটেক্স প্রকল্প) নামে একটি কনডম কারখানা স্থাপিত করে যেটি এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানী লিমিটেডেরই একটি অন্যতম ইউনিট। এই প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা প্রাথমকিভাবে বছরে ১৫০ মিলিয়ন পিস , এখন এর উৎপাদন প্রতি বছরে আনুমানিক ২৪৯.৬০ মিলিয়ন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
এছাড়াও খুলনা এসেনসিয়াল লেটেক্স প্রকল্পের অধিনে টাঙ্গাইল জেলা মধুপুরে একটি ল্যাটেক্স প্রসেসিং প্ল্যান্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে । স্থানীয়ভাবে উন্নতমানের রাবার কষ সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করার পর খুলনা কেইএলপিতে সরবরাহ করা হয়।
গোপালগঞ্জ এ এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) থার্ড প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। ২০১৮ এঁর জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ একর জমির ওপর এ কারখানাটি নির্মাণ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের প্লান্টটি তে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ৮০০ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে