বৌল অফ হাইজিয়া

“বোল অফ হাইজিয়া” প্রতিকটি ফার্মাসিউটিক্যাল পেশার প্রতীক হিসাবে প্রায় ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হচ্ছে। ১৭৯৬ সালের দিকে প্যারিসিয়ান সোসাইটি অফ ফার্মেসির একটি মুদ্রায় এটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল। পরে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তান এবং আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন সহ বেশ কিছু ফার্মেসি বিষয়ক জাতীয় সংগঠনে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।
গ্রীক ও রোমান পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে অ্যাপোলো রোগ নিরাময়কারী, ভবিষ্যৎ বক্তা, সঙ্গীত ও জ্ঞানের দেবতা হিসেবে পরিচিত। অ্যাপোলো জিউস এবং লেটোর পুত্র। তার সন্তান ছিল ছিলেন দেবতা অ্যাসক্লেপিয়াস। পিতার কাছ থেকেই রোগ নিরাময় ও সুস্থতা প্রদানের ক্ষমতা লাভ করেছিলেন অ্যাসক্লেপিয়াস ।

অ্যাসক্লেপিয়াসের ৫ কন্যা একেক জন একেক ক্ষমতা অর্জন করেছিলে।গ্রিক রা তাদের মধ্যে হাইজিয়া (স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা এবং স্যানিটেশন); প্যানাসিয়া (সর্বজনীন প্রতিকার); ইয়াসো (অসুস্থতা থেকে পুনরুদ্ধার); এয়সো (নিরাময় প্রক্রিয়া); এবং
এগ্লায়া (সৌন্দর্য, জাঁকজমক, গৌরব) দেবি হিসেবে সম্মান করত ।

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে অ্যাসক্লেপিয়াস যখন নিরাময়ের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন,তখন তার কন্যা হাইজিয়া পরিস্কার পরিছন্নতার মাধ্যমে অসুস্থতা প্রতিরোধ এবং সুস্বাস্থ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার কাজে যুক্ত ছিল। ধারনা করা হয় হাইজিয়া নাম থেকেই “হাইজিন” শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।

গ্রিক ও রোমানরা হাইজিয়ার মূর্তি তৈরি করেছিল , তবে তাদের মূর্তি থেকে পরিষ্কার বিবরণ পাওয়া যায়নি। তার থেকেই ধারনা করা হয় একজন নারী একটি বৃহৎ সাপকে খাওয়াচ্ছেন এবং সাপটি তার দেহের চারপাশে জড়িয়ে আছে , সাপটি তার হাতে বহনকারী একটি বাটি বা পাত্র থেকে কোন কিছু পান করছিল ।

অ্যাসক্লেপিয়াস

দেবতা জিউস অ্যাসক্লেপিয়াসকে হত্যা করেছিলেন কারণ তার ভয় ছিল যে অ্যাসক্লেপিয়াস তাঁর নিরাময় শক্তির মাধ্যমে সমস্ত মানুষকে অমর করে দিতে পারে। অ্যাসক্লেপিয়াসের মৃত্যুর পরে, তাঁর সম্মানে নির্মিত মন্দিরের ভিতরে নিরীহ সাপ মৃত দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সাপগুলোকে তুলে আনার পরে সেগুলো আবার জীবিত হয়ে উঠে ।সেই থেকেই লোকেরা বিশ্বাস করত যে অ্যাস্কেলপিয়াসের নিরাময়কারী শক্তির জন্যই সাপগুলো জীবন ফিরে পেয়েছিল তারা এটিকে নিরাময়ের প্রতীক হিসেবে ধরে নেয় ।

হাইজিয়া

গ্রিক ও রোমানরা হাইজিয়ার মূর্তি তৈরি করেছিল , তবে তাদের মূর্তি থেকে পরিষ্কার বিবরণ পাওয়া যায়নি। তার থেকেই ধারনা করা হয় একজন নারী একটি বৃহৎ সাপকে খাওয়াচ্ছেন এবং সাপটি তার দেহের চারপাশে জড়িয়ে আছে , সাপটি তার হাতে বহনকারী একটি বাটি বা পাত্র থেকে কোন কিছু পান করছিল ।


অ্যাসক্লেপিয়াসের কন্যা হাইজিয়ার সেই সাপ ও পিতার সম্মানে তৈরি করা মন্দিরের দিকে বেশ আগ্রহ ছিল বলে জানা যায় । তাই গ্রীকরা মূর্তি তৈরির সময় হাইজিয়ার হাতের চারপাশে একটি সর্প এবং তার হাতে ওষুধের একটি বাটি তুলে ধরে।

পরবর্তীতে সুস্থতার প্রতীক হিসেবে হাইজিয়ার থেকে বাটি এবং সাপকে আলাদা করে “বোল অফ হাইজিয়া” প্রতীকটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার না করা হলেও এটিকে ফার্মেসির জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি প্রতীক হিসেবে ধরা হয় ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ” বোল অফ হাইজিয়া ” নামে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় যা ফার্মাসিস্ট পেশার জন্য অন্যতম সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসাবে বিবেচনা করা হয় ।

Bowl of Hygieiaঅ্যাসক্লেপিয়াসআন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনগ্রিক ও রোমানবোল অফ হাইজিয়াহাইজিয়া
Comments (০)
Add Comment