বাংলাদেশের প্রতিটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের ৯০ ভাগের বেশি শিক্ষার্থীর প্রথম পছন্দের তালিকায় একটি বিষয় থাকে, সেটা হলো ফার্মেসি বিভাগ..!!
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রথম সারির শিক্ষার্থীরা ফার্মেসি বিষয়ে অধ্যায়ন করে ৪ বছরের ব্যাচেলর অব ফার্মেসি (B.Pharm) ডিগ্রি অর্জন করেন!!
এখন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ৫ বছর মেয়াদি ব্যাচেলর অব প্রফেশনাল ফার্মেসি (Pharm.D) ডিগ্রি প্রদান করেন!!
এই ডিগ্রীর পরে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মাস্টার অব ফার্মেসি (M.Pharm) ডিগ্রী অর্জনের জন্য ১ অথবা ২ বছর সময় অধ্যায়ন করেন!!
এখন আসি এই সময় ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা কি কি মেজর বিষয়ে অধ্যায়ন করে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য.!
1. Pharmacology
2. Pharmaceutical Technology
3. Hospital Pharmacy
4. Clinical Pharmacy
5. Biopharmaceutics
6. Pharmacognosy
7. Molecular Biology and Biotechnology
8. Physical Pharmacy
9. Pharmaceutical Organic Chemistry
10. Pharmaceutical Inorganic Chemistry
ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জনের পর ফার্মেসি কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (PCB) এই শিক্ষার্থীদের Register-A গ্রেড সার্টিফিকেট প্রদান করেন…!!
পরিতাপের বিষয় এটাই যে একজন Register-A গ্রেড ফার্মাসিস্ট আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত সহ মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আমেরিকায় যেসব দায়িত্ব পালন করেন সেটার ৭০-৮০ ভাগ হচ্ছে রিটেইল ফার্মাসিস্ট, হসপিটাল ফার্মাসিস্ট ও ক্লিনিকাল ফার্মাসিস্ট হিসেবে, যা আমাদের দেশে শূন্যের কোঠায়!!
সারাবিশ্বে ফার্মাসিস্ট দের বাকি ২০-৩০ কাজ করেন শিক্ষকতা, গবেষণা ও ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাসট্রিতে!
এখন আসি স্বাস্থ্য খাতে ফার্মাসিস্ট দের ভূমিকা কি?
ফার্মাসিস্ট মূলত ডাক্তার ও নার্সদের মতোই স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি!!
যে ব্যক্তিদের হসপিটাল এন্ড ক্লিনিকাল ফার্মেসি বিষয়ক জ্ঞান আছে তারা নিশ্চয়ই জানেন একজন রোগীর সুচিকিৎসার জন্য ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট ও নার্স এই তিনের সংযোজন অতীব জরুরি!!
এই তিনের সংযোজন ছাড়া একজন রোগীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়!!
তবে দুঃখ জনক হলেও সত্যি যে ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের হাত ধরে চলে আসা বাংলাদেশের ফার্মেসি গ্রাজুয়েটরা স্বাস্থ্য খাতে উপেক্ষিত হয়ে আসতেছে বছরের পর বছর!!
এখন আমাদের বাংলাদেশর ফার্মাসিস্ট দের চাকুরীর জায়গা ঐ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাসট্রি (৮০-৯০%), শিক্ষকতা আর ৫-১০% অন্যান্য পেশার!!
আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যদি বাংলাদেশের ফার্মাসিস্ট দের হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কমপক্ষে বর্তমানের চেয়ে ৫০-৬০ ভাগ উন্নত হবে আর এদেশের শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পেতে ভোগান্তির অনেকটাই শেষ হবে!!
খুব কষ্ট লাগে যখন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় এর কাছে শোনা যায় Register-A ফার্মাসিস্টরা টেকনিশিয়ান !টেকনিশিয়ান সেইসব শিক্ষার্থী যারা SSC পাশ করার পর ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি কোর্স করে!
আমি বা আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করেছি তারা টেকনিশিয়ান নই!!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এবং ওনার সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের সবার কাছে অনুরোধ জানাই আপনারা স্বাস্থ্য সেবা খাতে আমাদের Register-A ফার্মাসিস্ট দের নিয়োগের ব্যাবস্থা করেন…!!
দেখবেন আমরা আমাদের স্বাস্থ্য সেবা বিশ্বমানের কাতারে নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ..!!
যেটা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়তে স্বাস্থ্য খাতে মজবুত ভিত্তি গঠন করতে সাহায্য করবে,!!
লেখক: প্রভাষক, ফার্মেসি বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়.
ইমেইলঃ shahin9238@gmail.com, sarkershahin@just.edu.bd