কোভিড ১৯ নিয়ন্ত্রনে বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

মাহফুজুর রহমান

গ্রীষ্ম জুড়ে আবহাওয়ার একটা খেলা কিন্তু লেগেই আছে, এই গরম নয়তো এই ঝড়-বৃষ্টি।তার সাথে যোগ হয়েছে  কোভিড- ১৯ নামক একটা আজানা ভাইরাস। সারা বিশ্বে এখনও এর কোন সমাধানের পথ খুজে পাচ্ছে না। কোভিডের হানায় পৃথিবীতে আমাদের জীবনধারণ ও দৈনন্দিন কাজেকর্মে অনেক পরির্তন  এনেছে, তবে শুধু  যে জীবনধারণ ও কাজে কর্মে পরির্তন  এনেছে এমনই নয়, পরিবর্তিত হয়েছে খাদ্যাভ্যাসের। স্বাদের কথা মাথায় রেখে শুধু যা খুশি তা খেলেই চলবেনা, খেতে হবে পুষ্ঠিসমৃদ্ব খাবার, শারিরিক ব্যায়াম করা ও নিয়ম মেনে সব কিছু করাও কিন্তু এইসময় খুব গুরুত্ব পুর্ণ । শুধু পুষ্ঠিসমৃদ্ব খাবার ও হবে  নিয়ন্ত্রনের মধ্যে। তা নাহলে এদেরকে পুজি করে শরীরে ক্ষমতা দেখাতে পারে কোভিড-১৯। খবারের অনিয়ম ও বেশি তৈলাক্ত খাবারের জন্য গ্যাস-বদহজমের মতো সাধারন সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে পুষ্টির অভাব হতে পারে। অপুষ্টির সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। সাধারণ ঠাণ্ডা জ্বর থেকে করোনা, সব রকম অসুখ থেকে বাঁচতে এই সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসক ও গবেষকরা।তাই এই সময় কিছু নতুন খাবারকে প্রতি দিনের খাবারের তালিকায় যোগ করতে হবে।

খাবারের তালিকায় যে সব উপাদান যোগ করতে পারেন

১. তিতা জাতীয় খাবারঃ যা কিনা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। তাই প্রতিদিনখাবারেরতালিকায়      রাখুনতিতা জাতীয় খাবার , যেমন – নিমপাতা, করল্লা। এসব তিতা জাতীয়  খাবারে আছে অ্যান্টিভাইরাল উপাদানযা কিনা শরীরকে মজবুত রাখেএবংএই সময় বাতাসে উড়ে বেড়ানো রোগজীবাণুর  সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।

২. জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবারঃ  শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে জিঙ্কের গুরুত্ব অপরিসীম। জিঙ্কের অভাবে একজন ব্যক্তিকে রোগ ব্যধির প্রতি আরও সংবেদনশীল করে তুলে। এই উপাদান শরীরের নতুন নতুন কোষ, এঞ্জাইম, কার্বহাইড্রেট প্রক্রিয়াজাত করন, খাবারে ফ্যাট ও প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে। পেশী ও হাড় ক্ষত  নিরাময়ে সাহায্য করে। এখন কথা হল কোথায় পাব জিঙ্ক ? হ্যা আপনি যদি মাংস পছন্দ করেন তাহলে ত কথাই নাই। লাল মাংসে জিঙ্ক পাবেন, তাছাড়া আঁশযুক্ত মাছ, ডিম, বাদাম,শিম, মসুর ডাল, মটরশুটি খেলেও  জিঙ্কের ঘাটতি পুরন হবে।

৩.লবঙ্গদারুচিনিকাঁচাহলুদ-রসুন-আদা:   রান্নায় ব্যবহারকরা হয় যা মশলা হিসেবে আমাদের দেশে প্রচলিত আছে, তাদের আবার কিছু  ওষধি গুনও আছে। আয়ুর্বেদ তার মধ্যে লবঙ্গ-দারচিনি- কাঁচা হলুদও রয়েছে।রান্নায় যোগ করুন লবঙ্গ ও দারচিনি।এদের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মহামারির বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।

কাঁচা হলুদেরও অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল উপাদান শরীরকে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচায়।হয় টুকরো করে কেটে চিবিয়ে খান, নয়তো কাঁচা হলুদ বেটে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খান প্রতিদিন।বিশেষ করে শ্লেষ্মাজনিত অসুখের বিরুদ্ধে বড় ঢাল হয়ে কাজ করে।

প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ঠাসা এই মসলা অনেক কার্যকরী দিক রয়েছে।অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ঠাসাএই উপাদান রক্ত কে পরিশুদ্ধ রাখে।কিছু ভাইরাসও সংক্রমণজনিত অসুখ—  যেমন ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ইত্যাদি প্রতিরোধে এই সব্জির ভূমিকা অনেক।শ্লেষ্মাজনিত অসুখ রুখতে কাজে আসার সাথে সাথে  শরীরের রোগপ্রতিরোধের দেওয়ালকেও মজবুত করে।তাই এইসময় রান্নাতেও ব্যবহার করুন হলুদ ।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আদার গুরুত্ব অপরিসীম। আদায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায়  ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভাল কাজ করে। তাছাড়াও আদায় আছে আয়রন, দস্তা, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকায় রোগপ্রতিরোধে দারুন কার্যকারী।

৪.ফলমূল: ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচতে শরীরকে স্বাভাবিক শক্তির জোগান দিতেও  ভিটামিন সি-খনিজের উপাদান যাতে ঘাটতি না পড়ে সেদিকেও এই সময় নজর দিতে হবে।প্রতিদিন অন্তত ১০০গ্রাম ওজনের যেকোনও ফল খান।কমলালেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি৷প্রতি১০০গ্রামের মধ্যে ৫০মিলিগ্রামই ভিটামিন সি থাকে৷স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য এই ফল শুধু খেতেই মজাদার নয়, এতে রয়েছে খুবই কম ক্যালোরি৷একগ্লাস কমলার রস প্রতিদিন সকালে পান করলেই দিনেরপ্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-র অভাব পূরণ হয়ে যাবে৷  ভরপুর।লেবুর উচ্চ ভিটামিন যা শরীরের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যেকোন ভাইরাসজনিত ইনফেকশন যেমন ঠান্ডা, সর্দি, জ্বর দমনে লেবু খুব কার্যকারী, মুত্রনালীর ক্ষত সারাতেও লেবুর গুরুত্ব রয়েছে।যারা খাবারে যথেষ্ট পটাশিয়াম গ্রহণ করেনা, তারা সহজেই নানা  রকম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে।লেবুর রসে যথেষ্ট পরিমান পটাশিয়াম রয়েছে যা হাইপারটেনশন কমাতে সাহয্য করে।তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান।যা আমাদেরদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।যাঁরা গরমে কাজ করেবা যাদের বেশি ঘাম হয়, তাঁদের নিয়মিত তরমুজ খাওয়া দরকার।এতে শরীর তাড়াতাড়ি দুর্বল হয়না।তরমুজে যে পটাশিয়াম থাকে তা মানবদেহে উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।পুষ্টিবিদদেরমতে তরমুজ হৃদরোগ, হাঁপানী, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) রোগপ্রতিরোধে ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। গ্রীষ্মের অন্যতম রসালো এই ফলপুষ্টিগুণে ভরপুর।যা শরীরের ভিটামিনের অভাবপূরণের পাশাপাশি কর্মশক্তি যোগায়।এছাড়া রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি, যা শরীরে শক্তি তৈরি করে।আমের আয়রন, আঁশ, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও খনিজ উপাদান শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।কাঁচা আমে ৯০মাইক্রোগ্রাম এবং পাকা আমে৮,৩০০মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন থাকে।আম থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।ভিটামিন সিস্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।দাঁত, মাড়ি, ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন সি।

৫. শাক- সবজিঃ প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসব্জি।যেমন – শসা, মিষ্টি  কুমড়া, লাউ, কাচ কলা, কচু, পালং শাক এধরনের শাক সবজি খাবারের তালিকায় রাখা যেতে পারে। শশায় রয়েছে প্রাকৃতিক ব্রেথফ্রেশনারের গুণ।পোকা মাকড়ের হাত থেকে যে পলিকেমিক্যাল শশাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে সেই পলিকেমিক্যালগুলিই দুর্গন্ধ উত্‍পাদনকারী ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়তে সাহায্য করবে। শশায় ভিটামিনসি, বিটা-ক্যারোটিন, ম্যাঙ্গানিজ, ফ্ল্যাভেনয়েডস, ট্রিটারপেনেস, লিগনান নামেরপলিফেনল অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকমাতে, শরীরের ব্যাড কোলেস্টেরল কমাতে এবংরক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে | কাচ কলায়  আছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন।

৬.দুগ্ধ জাতীয় খাবার: টক গরুর দুধ শরীরের জন্য খুবই উপকারী ।দুধের গুনাগুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না, তাইত দুধকে আদর্শ খাবার বলা হয়। তাছাড়াও দুধ হতে প্রক্রিয়াজাত খাবারের গুনাগুনও একই। তার মধ্যে দই অন্যতম,দইয়ের ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের জন্য ভীষণ উপযোগী।টক দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান লিভার কে যেমন সুস্থ রাখতে এর জেরেকোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে।অনেকেই দুধ খেতে পারেন না।সেক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন দইয়ের উপর।দুধের তুলনায় দই অনেক বেশি সহজে পরিপাক হয়ে থাকে। শরীরকে ডি-টক্সিফাই করতে দইয়ের জবাব নেই।শরীরের টক্সিন যত সরবে, সুস্থতার পথে ততই এগিয়ে থাকা সম্ভব হবে। এতে আছে প্রচুর পরিমান ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যা হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক।টক দইয়ের ব্যাকটেরিয়া অত্যন্ত উপকারী।এটা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া কে মেরে ফেলে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়িয়ে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।এতে আছে ল্যাকটিক অ্যাসিড, যা  কোষ্টকাঠিন্য দূর করেও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে।যারা দুধ খেতে পারেননা বা দুধ যাদের হজম হয় না, তারা অনায়াসেই টক দই খেতে পারেন।কারণ টক দইয়ের আমিষ দুধের চেয়ে সহজে পরিপাক হয়ে থাকে।ফলে কম সময়ে হজম হয়ে থাকে।

৭.প্রোটিন জাতীয় খাবারঃশরীরগড়তে গেলে প্রোটিন ও চাই ভরপুর।খাবার পাতে উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ, যে কোন রকমের প্রোটিন রাখুন রোজ।মাছ, মাংস, সয়াবিন, মুসুরডাল, ডিম এসব থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে ও রোগ প্রতিরোধ ক ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

৮. ঔষধি গুনসম্পন্ন উদ্ভিদঃ পৃথিবীতে এমন অনেক ধরনের উদ্ভিদ আছে যেগুলোতে প্রচুর ঔষধিগুণ রয়েছে। যেমনঃ তুলসি পাতা, পুদিনা পাতা, কালমেঘ, অর্জুন গাছের ছাল ইত্যাদি। তুলসি পাতার রসের ব্যবহার হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। ঠাণ্ডা, কাশি ও সর্দি জনিত রোগ তুলসি পাতার রসের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। পুদিনা গাছ ওপাতারও আছে ঔষধিগুণ। এই গাছটির কাণ্ড ও পাতা বেশ উপকারি।পুদিনায় রোজমেরিক অ্যাসিড নামের একধরনের উপাদান থাকে।এটি প্রাকপ্রদাহী পদার্থ তৈরিতে বাধা দেয়।ফলে অ্যাজমা হয় না।যাদের শরীরে বেশি ঘাম হয় তারা পুদিনা পাতাও গোলাপের পাপড়ি এক সঙ্গে মিশিয়ে পানিতে ফুটিয়ে নিন।ঠাণ্ডা হলে সেই পানির সঙ্গে পাতি লেবুর রস মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে বোতলে করে ফ্রিজে রেখে দিন।

৮. পানি: শরীরে পানির ভাগ কমলে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে তেমনই ডিহাইড্রেশন থেকে হওয়া নানা সমস্যা জন্য শরীর সহজেই ভাইরাসের শিকার হয়।তাই পানি পানের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।সম্ভব হলে ফোটানো পানি খান।পানি শরীরের টক্সিন বের করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে।

তাছাড়াও মাশরুম, হাড়ের ঝোল, এলডারবেরি টিঙ্কচার ( ফুল ও বাকলের মিশ্রণে তৈরি) , প্রক্রিয়াজাত খাবার ( ফার্মেন্টেড খাবার যেমন পান্তা ভাত, দই, শুটকি মাছ ইত্যাদি )  খাওয়া যেতে পারে।

তাছাড়াও আমরা কিছু প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে পারিঃ

১. খালিপেটে সকালবেলা হলুদ দুধ খেতে পারেন। গরুর দুধে এক চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, ১/২ চামচ দারচিনির গুঁড়ো, ১/৪ চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে হলুদ দুধ বানান। সুগার না খেলে মধু মেশাতে পারেন। হলুদ দুধ খেয়ে আধঘণ্টা কিছু খাবেন না।

২.  সকালে এমন খাবার খান যাতে কোনও অস্বাস্থ্যকর উপাদান নেই। গম ও ছোলা  ভেজে গুঁড়ো করে তাতে ওটস ও বার্লি  মিশিয়ে দুধ বা পানি দিয়ে ফুটিয়ে ফল মিশিয়ে খেতে পারেন।

৩. দিনে কমপক্ষে তিনবার লেবু চা খান, সম্ভব হলে দারুচিনি , লবঙ্গ ও তেজপাতা দিয়ে পানি গরম করে আধা ঘণ্টা পর পর খেতে পারেন। এই মিক্সারকে চার পানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

৪. সকালে চা-এর বদলে আয়ুর্বেদিক ক্বাথ খেতে পারেন। তুলসি, পিপলি, আদা ও মধু দিয়ে বা তুলসি, আদার সঙ্গে গোলমরিচ, দারচিনি, কিশমিশ, মধু ও লেবুর রস দিয়ে ক্বাথ বানাতে পারেন। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়বে, বাড়বে হজমশক্তিও।

৫. দুপুরে ভাতের সঙ্গে কাঁচা হলুদ ও গোলমরিচ বাটা খেতে পারেন। ডাল-সব্জির সঙ্গে লেবু খাওয়ার পরিমান বাড়িয়ে দিন, খাওয়ার পর কোনও টক ফল খেতে পারেন।

৬. কালজিরা ও মধু খেতে পারেন নিয়মিত।

৭. লেবু দিয়ে ধনেপাতা বা পুদিনা পাতার ভর্তা অথবা আমলকির রস খেতে পারেন।

৮. সব ধরনের মশলা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রান্নায় ব্যবহার করুন। যেমন, ধনিয়া, জিরা, হলুদ, গোলমরিচ, আদা, রসুন, মেথি, কালোজিরা ।

৯. এমন একটি মশলা বানিয়ে নিন যাতে ইমিউনিটি বাড়ে। এই মশলা বানাতে আপনি ৩ চামচ করে জিরা, ৩ চামচধনিয়া, ৬ চামচ মেথি ও এক চামচ গোলমরিচ ভেজে, গুঁড়ো করে নিন। তাতে মেশান এক চামচ আদার গুঁড়ো, ৬ চামচ হলুদ গুঁড়ো ও ১/৪ চামচ দারচিনির গুঁড়ো।  যে কোনও রান্নায় (সব্জি, ডাল, স্যুপ)  মিশ্রনটি ব্যবহার করার আগে এক চামচ ঘি অল্প গরম করে তাতে এক চামচ মশলা দিয়ে নেড়ে ব্যবহার করুন।

খাবার যেভাবে খাওয়ার উচিতঃ

নিয়ম করে খাবার খাওয়ার  প্রতি আমাদের সবারই একটু অনীহা আছে, আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা কিনা সকাল বেলা বেশির ভাগ সময় না খেয়েই কাটিয়ে দেই। আগে এমনটা করলেও এখন সে সব না করাই ভাল, যতটা পারেন নিয়ম মেনে চলুন।

১. সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে সকালে নাস্তা করে দিনটা শুরু করতে পারলে ভাল। খিদে পাক বা না পাক খেতে হবে। সকালে নাস্তা না করলে কিছু হবে না এমন ভাবনা বাদ দিতে হবে। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ে, ওজনও আয়ত্তে থাকে।

২. যতই খিদে পাক পেট কিছুটা খালি রেখে খেতে হবে। পানি খাওয়ার পরিমান বাড়িয়ে দিতে হবে। পানির বোতল সাথেই রাখতে হবে।

৩. রাতের খাবার হালকা হলে ভাল। বিছানায় যাওয়ার কমপক্ষে দুই ঘণ্টা আগে খাওয়ার চেষ্টা করুন। রাতে  খাওয়ার পর একটু পায়চারি করুন।

৪. খাবার খাওয়ার আগে হাত  ভালভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে সময় নিয়ে ভাল করে চিবিয়ে মন দিয়ে খান। তাড়াহুড়া করে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।  এভাবে খেলে হজম ভাল হয়। শরীরে খাবারের পুষ্টি ভাল ভাবে শোষিত হয় । রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন পুষ্টিকর খাবার বা ভেষজ নিয়মিত খান ।

৬. ওজন যাতে না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখুন। নিয়মিত শারিরিক ব্যায়াম করুন।

৭. অতিরিক্ত ডায়েট করা থেকে বিরত থাকুন।

রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার আরও কিছু কারণ আছে, তারমধ্যে মানসিক  চাপ, অনিদ্রা, অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান, দীর্ঘদিনের কোনওঅসুস্থতা,  অনিদ্রা, মানসিকচাপ । এইসময় শরীর  শক্তপোক্তনাহলে ও রোগপ্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি না পেলে কোভিড আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ার সম্ভবনা থাকে।  খাবারে  পুষ্টি না পেলে রোগপ্রতিরোধক্ষমতার উপর তার বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে।

পরিশেষে বলা যেতে পারে, খাবারের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে , সাথে শারিরিক ব্যায়ামও খু্ব গুরুত্বপূর্ণ।  সুতরাং খাবারের পাশাপাশি শরীরচর্চার নিয়মিত করতে হবে। যা শরীর কে মজবুত করার পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

লেখকঃ জৈষ্ঠ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস্ লিমিটেড।

 

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টইমিউনিটিকভিড-১৯করোনা ভাইরাস
Comments (০)
Add Comment