করোনা মোকাবেলায় বড় ভূমিকা পালন করতে পারত হসপিটাল ফার্মেসী

নোভেল করোনা ভাইরাসের হানায় নিস্তব্ধ গোটা বিশ্ব। এক অঘোষিত ছুটিতে পুরো দুনিয়া। লাশের মিছিলে ভারী হচ্ছে বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত। ব্যতয় ঘটেনি বাংলাদেশেও। ইতিমধ্যে ২৩০ ব্যক্তি সংক্রমিত ও ২১ লোকের মৃত্যু হয়েছে।উদ্ভুত মহামারির প্রাথমিক অবস্থা সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশের ডাক্তার ও নার্সরা।একটি দেশের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হয় ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট ও নার্সের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে।

অথচ বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখনো চালু হয়নি হসপিটাল ফার্মেসী। চিকিৎসা শাস্ত্রে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও কাজে লাগানো হচ্ছেনা দেশের নিবন্ধিত ১৬২০০ গ্র‍্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের। ফার্মাসিস্টদের কাজের মধ্যে রয়েছে একটি ওষুধ কোন রোগের জন্য, কী কী উপাদান কী পরিমাণে মিশিয়ে উৎপাদন ও সংরক্ষণ করা হয়; ওষুধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য বিতরণ এবং এর সঠিক ব্যবহার ও প্রভাব নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসাগত প্রয়োগ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।


দেশের তৈরি ওষুধ দেশের মানুষের ৯৮ শতাংশ চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে, যা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের পক্ষে এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি। শুধু দেশের চাহিদাই নয়, বিশ্বের ১৬০ টি দেশে সুনামের সাথে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ যার সম্ভব হয়েছে এদেশের অসংখ্য ফার্মাসিস্টের সুনিপুণ কর্মতৎপরতায়। শুধুমাত্র ওষুধ উৎপাদনেই নয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে কার্যকর ভুমিকা পালন করার সক্ষমতা রয়েছে ফার্মাসিস্টদের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization- WHO)-এর মতে, উন্নত স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করার জন্য ফার্মাসিস্টদের শতকরা ৫৫ শতাংশ কমিউনিটি ফার্মেসি, ৩০ শতাংশ হসপিটাল ফার্মেসি, ৫ শতাংশ ম্যানুফ্যাকচারিং, ৫ শতাংশ সরকারি সংস্থায় এবং ৫ শতাংশ একাডেমিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হসপিটাল কিংবা কমিউনিটি ফার্মেসী নেই বললেই চলে। হসপিটাল ফার্মেসী চালু থাকলে দেশের এই মহামারীতে ডাক্তারদের পাশাপাশি সহযোদ্ধা হিসেবে ভুমিকা রাখত হাজারো ফার্মাসিস্ট। অসংখ্য সাধারণ রোগীর মুখে ফুটত সূর্য হাসি।বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর খবরে সয়লাব হতোনা দেশের মিডিয়াপাড়া। এমন নাজুক স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে আর কত কালক্ষেপণ করবে দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ?

   

লেখক: শিক্ষার্থী, ফার্মেসী বিভাগ  , কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় , বাংলাদেশ ।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *