জীবাণু নিয়ে অনেক গবেষনা তো হয়েই যাচ্ছে সেই করোনা শুরু হওয়ার সময় থেকে। অনেক পথ তো পেরিয়ে গেল,করোনা দাপট কিছুটা কমেছে বৈকি কিন্তু ভবিষ্যত নিয়ে তো ভাবার এখন সময় এসে গেল।ভ্যাক্সিন নিব কি নিব না সেই নিয়েই এখন বেশি মাতামাতি। সে যাই হোক না কেন, বিদেশ থেকে আগত এক জীবাণু নিয়ে তো অনেক হল,দেশীয় এরকম অনেক করোনার আত্নীয় তুল্ল্য জীবাণু যে আমাদের চারপাশে অনেক দাপট নিয়েই ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে তার খবর কি আমরা রাখছি।
বিষয়টা একটু খুলেই বলি। করোনা আসার পর জীবাণুর অস্তিত্ব সম্পর্কে আমাদের ঢের ধারনা হয়ে গেছে। আগেই বলেছি, জীবাণু কখনো হারিয়ে বা শেষ হয়ে যায় না, শুধুমাত্র তাদের রুপ পালটায় মাত্র।মিউটেশন এর মাধ্যমে তাদের পরিবর্তন হয় আর কি।করোনার অনেক মিউটেশন নিয়ে অনেক গবেষনা দেশে –বিদেশে হয়ে যাচ্ছে। আমাদের চারপাশের চলমান জীবাণুর মিউটেশন নিয়ে আমরা কতটা ভাবছি।
ঔষধ শিল্পে আমরা অনেক এগিয়েছি।গুনগত মান নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।জীবাণুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই যথাযথ মান নিয়ন্ত্রন এবং নিশ্চিতকরন করা হয়। মাইক্রোবায়োলজিষ্ট এর ভুমিকা এখানে অপরিসীম। মান নিয়ন্ত্রন-নিশ্চিতকরনে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে ফার্মাসিস্ট-কেমিষ্ট-বায়োকেমিষ্টগণ।
এবার আসি খাবার দাবার নিয়ে। আমরা যে ভেল পুড়ি,ফুচকা খাচ্ছি, সেটার মান নিয়ন্ত্রন করবে কে?গবেষনায় তো সেখানে অনেক ক্ষতিকারক জীবানু পাওয়া গেল, এমনকি মলে পাওয়া জীবাণুর সাথে অনেক সাদৃশ্য জীবাণুও পাওয়া গেল।তাতে কার কি হয়েছে।এসব বিষয় নিয়ে কেউ নিউজ করেই প্রথমেই আমরা একে অন্যের দোষ খুজার চেষ্টা করি।সরকার কি করলো এসব বিষয়ে নিয়ে সমালোচনা শুরু করি।আমি-আপনি সচেতন না হলে সরকার কি করবে।সবকিছু কি আর অভিযান এবং আইন প্রয়োগ করে হয়।স্কুলের ক্লাসে মানুষ গড়ার কারিগর মহান শিক্ষক কিন্তু তার সব ছাত্রদেরই ভাল মানুষ হতে বলে।সবাই কি আর তার কথা শুনে নাকি শুনবে।
সে যাই হোক, যে খাবার টা আমরা খাচ্ছে তার গুনগত মাননিয়ন্ত্রনে আমাদের একটা বড় ভুমিকা রয়েছে।করোনাকালীন সময়ে আমরা ঠিকই ওয়ান টাইম গ্লাসে চা-পানি খেয়েছি বা খাচ্ছি কিংবা চায়ের কাপটা ভালভাবে গরম পানি দিয়ে ধৌত করতে বলছি, দোকানদার মাস্ক পড়ে আছে কিনা খেয়াল করছি, আশেপাশের মানুষগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন আছে কিনা খোজ নিচ্ছি। তাহলে কেন স্বাভাবিক সময়কালীন সময়েও এর ব্যাতিক্রম হবে??? মৃত্যু ভয় কি শুধু করোনাতেই? তিল তিল করে যে জীবাণুগুলো আমাদের সব শেষ করে যাচ্ছে,সে খেয়াল কি আমরা রাখছি!
সর্বস্তরে সচেতন না হলে আমাদের আগামী প্রজন্ম বার বার এই করোনা সমতুল্য সকল ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাস আমাদের গ্রাস করেই যাবে।সামান্য অসতর্কতার কারনে আগামীকালের মৃত্যুর মিছিলে হয়তো আমি-আপনিই যোগ দিতে পারি। জীবন অনেক সুন্দর, তাই একে ভালোবাসাই পরিবার এবং নিজের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছি।
জয় হোক মানবতার।
লেখক: মাইক্রোবায়োলোজিষ্ট