এলিজাবেথ গোকিং গ্রীনলিফ

প্রথম আমেরিকান নারী ফার্মাসিস্ট

0

“এলিজাবেথ গুকিং গ্রীনলিফ” । তিনি বিশ্বের সকল নারী ফার্মাসিস্টদের কাছে এক অনন্য রোল মডেল। নারী ফার্মাসিস্ট এর অগ্রযাত্রায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নারীজাগরণের সূত্রপাত ঘটায়। ২০১২ সালে, আমেরিকান ফার্মাসিস্ট এসোসিয়েশন কর্তৃক সম্মাননা পাওয়া ১৭ জন নারীদের একজন তিনি। ফার্মেসি চর্চায় নারীদের অগ্রগতিতে অবিস্মরণীয় অবদান রাখায় তাকে এই সম্মাননা দেয়া হয়। তিনিই প্রথম আমেরিকান নারী ফার্মাসিস্ট এবং ফার্মেসির জননী (মাদার অফ ফার্মেসী ) হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।

প্রতিবছর ১২ ই অক্টোবরকে “বিশ্ব নারী ফার্মাসিস্ট দিবস” হিসেবে পালন করা হয়। আর দিনটিতে এলিজাবেথ গুকিং গ্রীনলিফকে নারী ফার্মাসিস্টদের অগ্রদূত হিসেবে এবং তার অসামান্য অবদানের জন্য শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।

এলিজাবেথ গুকিং গ্রীনলিফ ১৬৮১ সালের ১১ ই নভেম্বর যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ, মাসাচুসেটস কলোনিতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা স্যামুয়েল এবং মাতা ম্যারি গুকিং এর কোল আলো করে সম্ভাবনাময় শিশু গুকিং এর জীবনের সূত্রপাত হয়। পিতা মাতার সাথে নিজ জন্মস্থানেই বেড়ে উঠেন এলিজাবেথ গুকিং। ১৭০১ সালের ১৮ ই নভেম্বর, ২০ বছর বয়সে এলিজাবেথ গুকিং, ড্যানিয়েল গ্রীনলিফ নামক একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষের সাথে বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হন। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী ড্যানিয়েল গ্রীনলিফ পেশায় একাধারে একজন চিকিৎসক এবং ঔষধ প্রস্তুতকারক ছিলেন। বিবাহের পর এলিজাবেথ গুকিং গ্রীনলিফ তার স্বামীর সহযোগিতায় ফার্মাসিউটিক্যাল ক্যারিয়ার গঠনে মনোনিবেশ করেন।

প্রথমদিকে এলিজাবেথ তার স্বামীর সহযোগী হিসেবে রোগীর চাহিদা অনুযায়ী ঔষধ প্রস্তুত করতে কাজ করতেন। কাজে দক্ষতা অর্জনের পর তিনি তার কাজকে আরো সুদুরপ্রসারি করার পরিকল্পনা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ১৭২৭ সালে তার বাসস্থান ত্যাগ করে বসটোনে আসেন নিজের প্রস্তুতকৃত ঔষধ চাহিদাসম্পন্ন জনগনের মাঝে বন্টন করতে। তিনি সেখানে একটি ঔষধ প্রস্তুত করার এবং তা বিক্রয়ের জন্য দোকান স্থাপন করেন। যদিও সে সময়ে কেবলমাত্র পুরুষরাই ঔষধ প্রস্তুত করে থাকতেন, তবে মাসাচুসেটস এ নারীদের ফার্মেসি প্রাকটিসে কোনরকম নিষেধাজ্ঞা ছিলো না।

তখনকার সময়ের নিউ ইংল্যান্ডে মোট ৩২ জন ঔষধ প্রস্তুতকারকদের মধ্যে একমাত্র নারী হিসেবে কাজ করেছিলেন এলিজাবেথ । ১৭২৭ সালের শেষের দিকে, স্বামী ড্যানিয়েল গ্রীনলিফ তার পূর্বের পেশা থেকে পদত্যাগ করে স্ত্রী এলিজাবেথ এর সাথে তার দোকানে যোগদান করেন। তারা দুজন একসাথে কিছু দশক দোকান পরিচালনা করেন। গ্রীনলিফ দম্পতি ১২ জন সন্তান এর অভিভাবক ছিলেন। তারপরও এলিজাবেথ ১২ জন সন্তানের মা এবং একজন ঔষধ প্রস্তুতকারক হিসেবে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে পালন করতে সক্ষম হয়েছেন।

১৭৬২ সালের ১১ ই নভেম্বর এলিজাবেথ গুকিং গ্রীনলিফ তার জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মতামত দিন
Loading...