আগে আমরা সবাই বলতাম দেশের সাধারন জনগনের কথা ” যে তারা ফার্মাসিস্টদের তথা গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের সম্পর্কে জানেন না, গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কারা, তাদের কাজ কি কি, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের কোন কোন অংশে তাদের কি কি ভুমিকা রয়েছে৷
এখন ধারনা হচ্ছে শুধু সাধারন কেন!! দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কেউই হয়তো সঠিক ভাবে জানেন না যে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট কারা বা কোন কোন ক্ষেত্রে তারা কাজ করতে পারেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কথায় এটা সুনিশ্চিত। ফার্মাসিস্ট বলতে হয়তো উনি জানেনই না যে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট আছে!যা জানেন তা থেকে বলতে গিয়ে ঢালাও ভাবে সবাইকে টেকনিশিয়ান বানিয়ে দিয়েছেন!
এর আগেও এমন বিষয় উঠে এসেছে যখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরামের পক্ষ থেকে হসপিটাল ফার্মাসিস্ট বিষয়ে আবেদন জমা দেয়ার সময়৷ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের সম্পর্কে একদমই জানে না, তারা যা জানে প্রচলিত ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট । এবং নীতিমালা অনুযায়ী সম্প্রতি ৩৮১ জনের নিয়োগও সম্পন্ন হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে।
বিষয়গুলো গ্রাজুয়েটদের জন্য খুবই দুঃখজনক একই সাথে মর্মান্তিক।
এখন সম্ভাব্য করনীয় কি হতে পারে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের?
আমার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে মনে হয় প্রথমত, যেমনটা এখন চলছে বেশ লেখালিখি, অনলাইন সেমিনার, লাইভ অনুষ্ঠান, টিভি নিউজ রিপোর্ট এগুলো আরো জোরেশোরে চালানো যতদিন না হসপিটাল ফার্মেসি বাস্তবায়ন না হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সম্মানিত শিক্ষকগন নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পত্রিকা প্রত্রিকা, অনলাইন ম্যাগাজিন, নিজেদের ফেসবুকে টাইমলাইনে লিখছেন। যা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালন করছে এবং করবে।নিয়মিতভাবে তুলনামূলক লেখা প্রকাশ করা যেতে পারে যাতে সবাই উন্নতদেশগুলো এবং আমাদের মাঝে পাথক্য গুলো সবাই অনুধাবন করতে পারে। মোটকথা, সবাইকে আরও বেশী বেশী নিজেদের সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে সেটা যেকোন উপায়ে৷ যেন শেষ পর্যন্ত মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কানেও পৌছায় গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরা আছেন।
দ্বিতীয়ত, গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের সংগঠন গুলো নিয়মিত ভাবে মন্ত্রনালয়, অধিদপ্তরে যোগাযোগ রেখে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের নিয়োগ বিষয়ক ফাইল গুলো কোথায় কেমন আছে সেগুলো ফলোআপ করতে পারে যা একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে। এবিষয়ে যদি সংশ্লিষ্টদের নিয়মিত ভাবে বিভিন্নভাবে নক দেয়া সম্ভব হয় তবে সেটা করতে হবে। সেই সাথে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টদের কথা নীতিনির্ধারনী ফোরামে নিয়মিতভাবে তুলে ধরা যতটুকু এবং যেভাবে সম্ভব।
তৃতীয়ত, কিছু বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে যেমন: আমাদের প্রচলিত আইন ও নীতিমালা অনুসারে সবাই ফার্মাসিস্ট!! অর্থাৎ গ্রেড সম্পর্কিত বিতর্ক, কাদেরকে ফার্মেসি টেকনিশিয়ান/ এসিস্ট্যান্ট বলা হবে? এরপর আমরা ফার্মাসিস্টরা পরিপূর্ণভাবে হসপিটালে প্রাকটিসের জন্য প্রস্তুত কি না? এসবের মত কিছু বিষয় নিয়ে নানা মত রয়েছে এগুলো নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কিছু কর্মপরিকল্পনা এবং সুপারিশ প্রনয়ন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলোকে জানানো। এক্ষেত্রে যারা হসপিটাল ফার্মাসিস্ট রয়েছেন তারা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন কারন তারা জানেন বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে তারা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন বা আদো হয়েছেন কি না? বা হলে তা থেকে উওরনের উপায় কি হতে পারে?
সকল ক্ষেত্রেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকগণ এবং সিনিয়র গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টগন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে।
সবার সুনির্দিষ্ট ও সুসংগঠিত ও সুদৃড় চিন্তা আমাদেরকে হসপিটাল ফার্মেসির পথে অনেকদূর এগিয়ে নিতে পারে বলে বিশ্বাস করি।
আশাবাদী, হয়তো এরপর আর শুনতে হবে না গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টরাও , টেকনিশিয়ান!
লেখক: শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।