থার্মোমিটার আমরা সবাই চিনি । বিশেষ করে ডাক্তাররা থার্মোমিটার ব্যাবহার করে থাকেন শরীরের তাপমাত্রা মাপতে , তাদের কাছেই বেশিরভাগ সময় দেখা যায় , এহারা ল্যাবেও থার্মোমিটার ব্যাবহার করা হয় । এবার আসি থার্মাল গান বিষয়ে ।
থার্মাল গান আসলে একটি থার্মোমিটার। বাড়ির পারদ থার্মোমিটার শরীরের তাপে পারদ কতটা আকারে বাড়ল সেটি দিয়ে তাপমাত্রা মাপে। থার্মাল গান দিয়ে শুধু শরীর না,যে কোনো জিনিসের তাপমাত্রা মাপা যায়।চলুন দেখি কিভাবে এটা কাজ করে ।
এই ক্ষেত্রে যা ব্যাবহার করা হয় তা হল ইনফ্রারেড রশ্মি। একটি জিনিস চারপাশের থেকে উত্তপ্ত থাকলে তা সেই অতিরিক্ত তাপকে ইনফ্রারেড রশ্মি রূপে বের করে দেয়। এই রশ্মি চোখে দেখা যায়না। তবে গরম কিছুর কাছে হাত নিয়ে গেলে হাতে গরম ভাবটা অনুভব করা যায়,মুলত ওই ইনফ্রারেড রশ্মি আপনার হাতে লাগছে তাই আপনি গরম অনুভব করছেন। এই তত্ত্বটি কাজে লাগিয়েই থার্মাল গান তৈরি।
থার্মাল গান এর বিশেষ একটি দিক হল এর সাহায্যে অনেক দূর থেকে তাপমাত্রা মাপা যায় । এমন কি কয়েক মাইল দূর থেকেও তাপমাত্রা মাপা সম্ভব ।
থার্মাল গানে একটি লেন্স ব্যবহার করা হয় ,যা ওই ইনফ্রারেড রশ্মিকে কেন্দ্রীভূত করে একটি সেন্সরের উপর ফেলে । এই সেন্সরটি এই থার্মাল এনার্জির মাপ অনুযায়ী একটি ইলেক্ট্রিক সিগনাল তৈরি করে ,যা তাপমাত্রা হিসেবে স্ক্রিনে দেখায় ।
চলুন দেখি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়? থার্মাল গান বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহৃত হয় – মেশিনের তাপমাত্রা দেখতে,টেলিস্কোপ অপারেট করার জন্য মেঘ দেখতে,হিটার/ওভেনের তাপমাত্রা দেখতে, দমকল কর্মীরা আগুনের তাপমাত্রা দেখতে,এমন কি আগ্নেয়গিরির তাপমাত্রা দেখতেও।
জ্বর হয় এমন মহামারীতে, যেমন এখন করোনা (আগে সার্স, ইবোলা) পাবলিক স্ক্রিনিং করতে থার্মাল গান খুব কার্যকরী, কারণ এটি মানুষের গায়ে লাগাতে হয়না, অতএব কন্ট্যামিনেশন হয়না, এবং দ্রুত মাপা যায়,যা এমনি থার্মোমিটারে হয়না। তবে ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্বে ধরে রাখতে হয়। বেশি কাছে বা দূরে চলে গেলে রিডিং ভুল হওয়ার সম্ভবনা থাকে