আটা না ময়দা ! কোনটি বেশি স্বাস্থ্যসম্মত?

0

অনেকে মনে করেন আটা ও ময়দা এক-  কিন্তু আটা ও ময়দা কখনই এক নয় । তাদের মাঝে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে  তাহলে চলুন দেখি আসলে কি পার্থক্য

  • আটাগম পিষে তৈরি করা হয় আটা। এতে গমের বীজের সঙ্গে তার খোসাও পিষে ফেলা হয়। এজন্য  আটার রং অনেকটা বাদামী বা লালচে হয়।

যখন আটা তৈরী হয় তখন তাতে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপদানগুলি মজুদ থাকে। যেমন ফাইবার, এই ফাইবার থাকার কারণে আটা দিয়ে তৈরী খাবার সহজ পাচ্য হয়।

এছাড়া ফাইবার আমাদের হজমে সাহায্য করে, পরিপাক প্রক্রিয়া বাড়িয়ে তোলে এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেয় না। এছাড়া এই ফাইবার আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়তে দেয়না।

  • ময়দাকিন্তু ময়দা বানাতে আটাকে পরিশোধিত করা হয়। গম থেকে আলাদা করা হয় খোসা। এ কাজটি কয়েক দফা করলেই ময়দা মেলে।

ময়দাকে ‘অল পারপাসস ফ্লাওয়ার’ বলা হয়। এর সুন্দর শুভ্র চেহারা ও মসৃণতা আনার জন্যে রাসায়নিক উপাদান দিয়ে ব্লিচ করা হয়। এই কারণে ময়দা দেখতে সাদা ধবধবে হয়।

শরীরে এনার্জি প্রদান– 

  • আটাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি ৩, ভিটামিন বি ৫ বর্তমান। এগুলি প্রত্যেকটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এগুলি শরীরে এনার্জি প্রদান করে এছাড়া নতুন রক্তকোষের জন্ম দেয়।
  • ময়দাতে এই সমস্ত জরুরি ভিটামিন প্রায় সমস্তই নষ্ট হয়ে যায়। ফলত ময়দা আমাদের শরীরের তেমন কোনো উপকারেই লাগে না।

রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা / গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (Glycemic Index)

গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে যারা ওপরে অবস্থান করে সে সব খাবার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

ময়দার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স   আটার অনেক ওপরে অবস্থান করে। এর ফলে ইন্সুলিন কম মাত্রায় তৈরী হয়। ফলত আমাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনাকে ত্বরান্নিত করে। এছাড়া ময়দা আমাদের খিদেকে বাড়িয়ে দেয়।

এটি আমাদের শরীররে মেদ জমার একটি অন্যতম কারণ এর ফলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়। এই কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের আটার রুটি খেতে বলা হয়ে থাকে।

 কি উপাদান পাওয়া যায় ?

  • আটায় থাকে অ্যামাইনো এসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো দেহের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে। উদ্বেগ, ঘুম না আসা, মাথাব্যথা এবং বিষণ্নতা সারাতে এই উপাদানগুলো বেশ কাজ করে।
  • ময়দা অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যাসিডিক। কারণ ময়দা তৈরি করার সময় জরুরি নিউট্রিশনস ও ভিটামিন গুলি বেশিরভাগ মাত্রায় নষ্ট হয়ে যায় এবং একে অ্যাসিডক প্রকৃতির করে তোলে। যার ফলে এটি আমাদের শরীরে বর্তমান ক্যালসিয়ামকে ক্ষয় করতে থাকে, ফলত আমাদের শরীরে হাড়গুলির ঘনত্ব কমে যেতে থাকে। তাই ময়দা জাত দ্রব্য বেশি মাত্রায় খেলে আর্থারাইটিস এছাড়া আরো নানা ধরনের রোগের জন্ম দেয়।

সাধারণ ময়দা ব্যবহৃত হয় কেক, কুকি, পাস্তা, নুডলস, মাফিন এবং নানরুটি বানাতে। আর রুটি, পুরি এবং ডেজার্ট বানাতে লাগে আটা।

মতামত দিন
Loading...