থ্যালাসেমিয়া একটি রোগ ও অন্যান্য

থ্যালাসেমিয়া

[su_dropcap style=”simple” size=”5″]আ[/su_dropcap]লতাফ বছরের ছোট বাচ্চা ঢাকা মেডিকেল কলেজের করিডরে ঘোরাঘুরি করছেদূর থেকে দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও আলতাফের জীবন আর সবার মতো স্বাভাবিক নয়ছোট থেকেই সে থ্যালাসেমিয়া নামক এক মরনব্যাধীর কবলে আক্রান্ত

আজ ৮ই মে, বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসপ্রতিবছরের ন্যায় এবছর “সারা বিশ্বের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার অর্জনে বাধাঁ দূরীকরণ” এই প্রতিপাদ্যে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসরোগটা আমাদের দেশে খুব বেশী অপরিচিত নয়এই পর্বে আজ আমরা জানবো থ্যালাসেমিয়া নামক এই মরণব্যাধী সম্পর্কে। 

থ্যালাসেমিয়া হলো উওোরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এমন একটি রক্তবাহিত রোগ যখন লোহিত রক্তকনিকার অভ্যন্তরে হিমোগ্লোবিন এর পর্যাপ্ত মজুদ থাকে না বা উৎপাদন হয় নাফলে, লোহিত রক্তকনিকার কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়যেহেতু, ফুসফুস থেকে অক্সিজেন লোহিত রক্তকনিকার মাধ্যমে সমগ্র দেহে যোগান দেয়, যার ফলে শ্বাসকষ্ট, ক্লান্ত, দুর্বল হয়ে পড়ে আক্রান্ত ব্যাক্তিগুরুতর রক্তস্বল্পতা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই রোগের আক্রান্ত ব্যাক্তির। 

মূলত থ্যালসেমিয়া একটি জীনগত রোগ যা বংশপরম্পরায় ছড়িয়ে থাকেআক্রান্ত মানুষের দেহের অভ্যন্তরে জিনোম লোহিত রক্তকনিকাকে বাধ্য করে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন কমিয়ে আনতেথ্যালাসেমিয়াকে অ্যানিমিয়ার (দেহে লোহিত রক্তকনিকার পরিমাণ স্বাভাবিক থেকে কম হলে) পূর্বাবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়সাধারণ এই রোগের আক্রান্ত ব্যাক্তিদের আমরা মধ্যবয়সী হিসেবে কখনোই দেখতে পাই নাকেননা, এই রোগের গড় বয়সই ১৪২০ বছর হয়ে থাকেআফ্রিকান, মধ্য এশিয়ায় এই রোগের প্রার্দুভাব বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, [su_quote]শুধুমাত্র বাংলাদেশেই প্রায় সমগ্র জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত এবং প্রতি ১৪ জনের একজন এই রোগ বহন করে এবং গড়ে দেখা যায় দেশে ৭০ হাজারেও বেশী শিশু থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত । [/su_quote]  যা প্রতিবছর হাজারের মতো শিশু এই রোগ নিয়ে জন্ম গ্রহন করেআক্রান্ত ব্যাক্তিদের লক্ষ্য করলে দেখা যায় প্লীহা যকৃতের অস্বাভাবিক আকারের বড়,হলুদ বর্নের গায়ের রং, দুর্বলতাশারীরিক গঠনের অস্বাভাবিকতা অন্যতমপ্রশ্ন হচ্ছে আমি কি এই রোগে আক্রান্ত কিনা, সাধারণত পারিবারিক ইতিহাসের দিকে তাকালে কিছুটা ধারনা পাওয়া যায়পূর্ববতী এই রোগে কেউ আক্রান্ত ছিলো কিনাএছাড়া, দুইটি পরীক্ষা করার মাধ্যমেও জানা যায়সিবিসি হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা।  সিবিসি যা হিমোগ্লোবিন এর পরিমান রক্তকনিকার এর হিসাব করে থাকে এবং হিমোগ্লোবিন টেস্টের মাধ্যমে আলফাবিটা কণার উপস্থিতি জানা যায়এর মাধ্যমে ধারনা করা যায় একজন রোগী থ্যালাসেমিয়া পজিনিভ না নেগেটিভ। 

থ্যালসেমিয়া রোগীদের মূলত খাবার হিসেবে বলা চলে রক্তএদের প্রচুর পরিমানে রক্তের প্রয়োজন হয়সাধারণত প্রতি এক ব্যাগ রক্তে এদের এক মাসের মতো প্রায় চলে দ্বারা মোটামুটি এই রোগের আক্রান্তদের সামগ্রিক অবস্থা বোঝা যায়সারাদেশে সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব সহ ব্লাড ব্যাংকগুলো নিয়মিত রক্ত সরবরাহ করে থাকেতাই, আমাদের উচিত নিয়মিত রক্তদানে উদ্বুদ্ধ হওয়া, এইটুকু প্রচেষ্টা করো জীবনের রসদ হয়ে উঠতে পারে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *