আলতাফ ৮ বছরের ছোট বাচ্চা ঢাকা মেডিকেল কলেজের করিডরে ঘোরাঘুরি করছে। দূর থেকে দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও আলতাফের জীবন আর সবার মতো স্বাভাবিক নয়। ছোট থেকেই সে থ্যালাসেমিয়া নামক এক মরনব্যাধীর কবলে আক্রান্ত।
আজ ৮ই মে, বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। প্রতিবছরের ন্যায় এবছর “সারা বিশ্বের থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার অর্জনে বাধাঁ দূরীকরণ” এই প্রতিপাদ্যে সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। রোগটা আমাদের দেশে খুব বেশী অপরিচিত নয়। এই পর্বে আজ আমরা জানবো থ্যালাসেমিয়া নামক এই মরণব্যাধী সম্পর্কে।
থ্যালাসেমিয়া হলো উওোরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এমন একটি রক্তবাহিত রোগ যখন লোহিত রক্তকনিকার অভ্যন্তরে হিমোগ্লোবিন এর পর্যাপ্ত মজুদ থাকে না বা উৎপাদন হয় না। ফলে, লোহিত রক্তকনিকার কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। যেহেতু, ফুসফুস থেকে অক্সিজেন লোহিত রক্তকনিকার মাধ্যমে সমগ্র দেহে যোগান দেয়, যার ফলে শ্বাসকষ্ট, ক্লান্ত, দুর্বল হয়ে পড়ে আক্রান্ত ব্যাক্তি। গুরুতর রক্তস্বল্পতা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই রোগের আক্রান্ত ব্যাক্তির।
মূলত থ্যালসেমিয়া একটি জীনগত রোগ যা বংশপরম্পরায় ছড়িয়ে থাকে। আক্রান্ত মানুষের দেহের অভ্যন্তরে জিনোম লোহিত রক্তকনিকাকে বাধ্য করে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন কমিয়ে আনতে। থ্যালাসেমিয়াকে অ্যানিমিয়ার (দেহে লোহিত রক্তকনিকার পরিমাণ স্বাভাবিক থেকে কম হলে) পূর্বাবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধারণ এই রোগের আক্রান্ত ব্যাক্তিদের আমরা মধ্যবয়সী হিসেবে কখনোই দেখতে পাই না। কেননা, এই রোগের গড় বয়সই ১৪–২০ বছর হয়ে থাকে। আফ্রিকান, মধ্য এশিয়ায় এই রোগের প্রার্দুভাব বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে,
থ্যালসেমিয়া রোগীদের মূলত খাবার হিসেবে বলা চলে রক্ত। এদের প্রচুর পরিমানে রক্তের প্রয়োজন হয়। সাধারণত প্রতি এক ব্যাগ রক্তে এদের এক মাসের মতো প্রায় চলে। এ দ্বারা মোটামুটি এই রোগের আক্রান্তদের সামগ্রিক অবস্থা বোঝা যায়। সারাদেশে সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব সহ ব্লাড ব্যাংকগুলো নিয়মিত রক্ত সরবরাহ করে থাকে। তাই, আমাদের উচিত নিয়মিত রক্তদানে উদ্বুদ্ধ হওয়া, এইটুকু প্রচেষ্টা করো জীবনের রসদ হয়ে উঠতে পারে।