প্রোডাক্ট ম্যানেজম্যান্ট ডিপার্টমেন্টে (পিএমডি) চাকুরী প্রস্তুতি

নাজমুল ইসলাম আবির

0
শাকরি সবাই ভালো আছেন। একটু বিরতির পর লিখছি৷ অনেকেই বেশ আগে থেকেই ইনবক্সে অনুরোধ করেছিলেন প্রোডাক্ট ম্যানেজম্যান্ট ডিপার্টমেন্ট Product Management Department (PMD), Strategic Brand Management Department (SBMD) সম্পর্কে লিখতে। তাই আজ অনুরোধ রক্ষার পালা… চলুন শুরু করি৷
আমরা জানি ঔষধের বিপনন বা মার্কেটিং সাধারণ মার্কেটিং এর মত নয়৷ ঔষধের মার্কেট অত্যন্ত রেগুলেটেড। আর এর গ্রাহক বা কাস্টমার সরাসরি সাধারন জনগন নয়৷সাধারন জনগন হচ্ছে ভোক্তা বা কনজুমার। ঔষধের টার্গেট কাস্টমার হচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়ের হেলথকেয়ার প্রফেশনালরা বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার। বাংলাদেশ হেলথ কেয়ার সিস্টেমে বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছেন ফার্মাসিউটিক্যাল এর টার্গেট কাস্টমার৷
আমরা চাইলেই ঔষধ সাধারণ জনগণের কাছে বিক্রি করতে পারি না(ওটিসি ড্রাগ ব্যাতিত) তাই ফার্মা মার্কেটিং অন্য যে কোন মার্কেটিং থেকে আলাদা।
এবার আসি মার্কেটিং বা ব্রান্ড ম্যানেজম্যান্ট ডিপার্টমেন্টের কি কাজ সেই বিষয়ে। ইয়ারলি মার্কেটিং প্ল্যান তৈরী, বাজেট করা, ব্রান্ড ম্যানেজম্যান্ট রিলেটেড সকল কাজ করা, প্রমোশনাল আইটেম গুলো ডিজাইন করা, হেলথ কেয়ার প্রফেশনালদের সাথে যোগাযোগ ও বিভিন্ন প্রমোশনাল ইভেন্ট কো অর্ডিনেট করা, মান্থলি সেলস মিটিং, কনফারেন্স আয়োজন করা, মাড়কেট রিসার্চ করা, রিপোর্ট ও মনিটরিং করা, নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আনার সকল কাজ করা, ফিল্ড ফোর্সদেরকে প্রোপারলি ট্রেনআপ করা, সেলস রিভিউ করা।
এবার মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের এ জবের জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নেয়া যেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করা যাক৷
ফার্মাকোলজি হচ্ছে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে পরীক্ষা প্রস্তুতির মূল সাবজেক্ট। অবশ্যই অবশ্যই আপনাকে ফার্মাকোলজির উপর ভালো দখল থাকতে হবে। বিভিন্ন ক্লাসের ড্রাগ, তাদের শ্রেণী বিভাগ, মেকানিজম অফ একশন, সাইড ইফেক্ট, এডভার্স ইফেক্ট, ইন্টারএকশন এগুলোখুব ভালো ভাবে জানা থাকা প্রয়োজন৷ এখন এক্ষেত্রে যে সমস্যা টি হয় তাহলে এত ঔষধ সম্পর্কে জানি ঠিকই কিন্তু মনে রাখা কষ্ট সাধ্য! এক্ষেত্রে আপনি প্রায়োরিটি লিস্ট তৈরী করে পড়তে পারেন৷ যেসকল ড্রাগ বাজারে সবচে বেশী চলে যেমন পিপিআই, এনএসএআইডি, এন্টিবায়োটিক, লিপিড লোয়ারিং ড্রাগ, এরকম ভাবে তাহলে সুবিধা হবে আশাকরি৷ এছাড়াও আরো যে বিষয় জানতে হবে তাহলো বেসিক বায়োফার্মাসিউটিক্স যেমন ফার্মাকোডায়নামিক্স, কাইনেটিক্স, এইউসি, থেরাপিউটিক ইনডেক্স এমন কিছু বিষয়।
এরপর মার্কেটিং রিলেটেড বিভিন্ন টপিকগুলো সম্পর্কেও জানতে হবে যেমন Brand, sales vs marketing, market, demand, supply, market positioning, market segmentation, Pharmaceutical market overview. Product and services. Top brands, Pharma marketing vs consumer marketing এই বিষয়গুলো৷
পরীক্ষা এসবের পাশাপাশি, কোম্পানি সম্পর্কে ও তাদের প্রোডাক্ট সম্পর্কে লিখতে আসতে পারে৷ এনালাইটিক্যাল এবিলিটি, বেসিক ম্যাথ রিলেটেড প্রশ্নও আসতে পারে৷
এছাড়াও মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে জব করার ক্ষেত্রে ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা, কমিউনিকেশন স্কিলথাকা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস এর অভিজ্ঞতা থাকলে তা বেশ মূল্যায়ন করা হয়।
International marketing (IMD): ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট মূলত দেশের বাইরে মার্কেট নিয়ে কাজ করে৷ আমরা যেহেতু দেশের বাইরে প্রায় ১৫০ টি দেশে ঔষধ রপ্তানি করি তাই দেশের বাইরে বাজার বিস্তারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি গুলো সে অনুযায়ী এক্সপোর্ট মার্কেটের অপরচুনিটিকে কাজে লাগাতে কাজ করছে৷ এই কাজটিই মূলত ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট বা গ্লোবাল বিজনেস ডিপার্টমেন্টের৷ এর জন্য প্রস্তুতিও অনেকটা আগের মতই৷ ফার্মাকোলজিতে সর্বাধিক গুরুত্বদিতে হবে এর পাশাপাশি গ্লোবাল রেগুলেটরি বডি, ড্রাগ রেজিষ্ট্রেশন প্রসেস এগুলো সম্পর্কেও জানা থাকতে হবে৷
এইতো মোটামুটি ফার্মাসিউটিক্যাল মার্কেটিং/ প্রোডাক্ট ম্যানেজম্যান্ট/ ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে৷
লেখক: দেশীয় ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফার্মাসিস্ট।
লেখা সম্পর্কে কোন মতামত, জিজ্ঞাসা, অভিজ্ঞতা থাকলে (Nazmul Islam Abir) জানাতে পারেন।
মতামত দিন
Loading...