বাংলাদেশের ঔষধশিল্পে করোনার প্রভাব

মোঃ মাছুম চৌধুরী

0

আমাদের ঔষধ শিল্প নিয়ে আমাদের অহংকারের শেষ নেই। কিন্তু আমাদের এখনও ৪০% কাচাঁমাল আনতে হয় চীন থেকে এবং ৩০% ভারত থেকে। ঔষধের কাচাঁমাল তৈরিতে আমাদের স্বক্ষমতা মাত্র ২%। আসলেই কী আমাদের অহংকার করা উচিত? কারণ ভারত ও চায়না থেকে ২/৩ মাস কাঁচামাল না আনতে পারলে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পে আলো জ¦লবে না।

আমাদের দেশের ৯৮% গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিষ্টরা এখনও সকাল বেলায় ঔষধের ফ্যাক্টরির উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন। কারণ প্রথম থেকেই ফার্মেসী শিক্ষা-ব্যবস্থার টার্গেট ছিল সেটাই। সেজন্য ফার্মাসিষ্টরা কীভাবে দেশের জন্য অবদান রাখছে বাঙ্গালী জাতির বুঝতে অনেক কষ্ট হয়। কারণ ফার্মাসিষ্টরা সুর্যের আলো উঠার পূর্বেই পিপিই পরিধান করে প্রবেশ করেন ফার্মাসিউটিক্যাল ফ্যাক্টরির চার-দেয়ালের মধ্যে এবং সূর্যের আলো ডুবে গেলে আবার ফার্মাসিষ্ট বের হয়ে আসেন সেই ফ্যাক্টরির চার-দেয়ালের মধ্যে থেকে। সাধারণ মানুষ জানে না ফার্মাসিষ্টরা আসলেই কী করে?

যাইহোক, আমি ভাবছি আমরা আর কতো দিন তাকিয়ে থাকবো ঔষধের কাচাঁমালের জন্য চায়না এবং ভারতের দিকে ? আমরা কেনো ঔষধের কাচাঁমাল তৈরির গবেষণার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি না? আর কতোদিন ভারত ও চায়নার ঔষধের কাঁচামালের গোপন কথাগুলো গোপন করে রাখবো ? ভাবছি এবং দেখছি চারদিকে কেউ কেউ ঔষধ শিল্প নিয়ে কতো সন্তুষ্ট ?

একদিন হয়তো চায়নাতে এবং ভারতে আমাদের সরকারকে ভিক্ষা করতে যাইতে হবে এবং বলতে হবে, আমাদের ঔষধ তৈরির কাচাঁমাল ভিক্ষা দিন নয়তো আমরা সুচিকিৎসার অভাবে মরবো। ডাক্তার ও ফার্মাসিষ্টরা না খেয়ে মরবে।

যাইহোক, আমাদের ঔষধ শিল্প সমিতি দেশে ঔষধের কাঁচামাল তৈরির পদক্ষেপ না নিয়ে কতোদিন সরকারের তৈলবাজি করতে পারে তা দেখার চেষ্টা করছি। সরকারকে অনুরোধ করছি, ফার্মাসিষ্টদের জন্য ভিক্ষার প্রনোদোনার টাকা না দিয়ে সেই টাকা দিয়ে ঔষধ শিল্পের জন্য কাচাঁমাল তৈরির নতুন ইন্ড্রাষ্টি গড়ে তোলার জন্য, ঔষধের গবেষণার জন্য পদক্ষেপ নিন খুব দ্রুত। হাতে কিন্তু সময় একদম নেই।

লেখকঃ ফার্মাসিস্ট , হেড অফ মার্কেটিং এন্ড সেলস , এশিয়াটিক ল্যাবরেটোরিজ । 

মতামত দিন
Loading...