ঔষধ কেনার সময় আপনার করণীয়

0

শরীরে যেকোন ধরণের অসুস্থতা অনুভব হলেই আমরা ডাক্তার দেখিয়ে থাকি। আর ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধও কিনে থাকি।ঔষধ এমন একটি উপাদান যা আমাদের জীবন রক্ষা করে। কিন্তু সেই ঔষধই আবার ভুল ব্যবহারে হয়ে উঠতে পারে জীবন সংহারী।তাই ঔষধ কেনার সময় প্রেসক্রিপশন ঔষধ বিক্রেতার কাছে দিয়েই নিশ্চিন্ত থাকা কোন ভাবেই সমিচিন হবে না৷ কারন তারও ভুল হয়ে যাওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়।

তাহলে আমরা যারা ঔষধ কিনবো তাদের করনীয় কি? চলুন দেখি ঔষধ কেনার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে

ঔষধের মেয়াদকাল দেখে কিনুন:
ঔষধের প্যাকেটের গায়ে মেয়াদকাল লেখা থাকে। কেনার আগে অবশ্যই তা দেখে নিন। মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ কেনা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন। ক্ষেত্র বিশেষে মেয়াদ শেষ হবার আর কয়েক মাস বা সপ্তাহ বাকি এ ধরণের ঔষধ কেনা থেকেও বিরত থাকুন।

ডাক্তাররের প্রেসক্রিপশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঔষধ কিনুন:
প্রেসক্রিপশনে যে ঔষধের নাম ডাক্তার লিখে দিয়েছেন, ঠিক সেই ঔষধটিই কিনুন।বাংলাদেশে ডাক্তাররা মূলত ঔষধের বানিজ্যিক নাম লিখে থাকেন৷ অনেক সময় কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী নতুন বা নিম্নমানের কোন ঔষধ কমিশনের লোভে আপনাকে নিতে প্ররোচিত করতে পারে। এক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হবেন না।

কিছু ঔষধ কম করে কিনুন:
ডাক্তার যদি আপনাকে তিন মাসের ঔষধ খাওয়ার জন্য দিয়ে থাকে এবং এক মাসের ভেতর আবারও দেখা করতে বলেন, সে ক্ষেত্রে এক মাসের ঔষধই কিনুন। কারণ এরপর হয়তো ডাক্তার কোনও ঔষধ বদলে দিতে পারেন। এছাড়াও ব্যাথানাশক ঔষধ, এন্টাসিড এবং স্যালাইন জাতীয় যে ঔষধগুলো প্রায়শই প্রয়োজন হয় সেগুলো অনেকগুলো কিনে বাসায় জমিয়ে রাখবেন না। এমন ঔষধগুলো কিছু কিনে রাখুন। নয়তো ঘরে থেকেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যেতে পারে।

দাম যাচাই করুন:
সাধারনত ঔষধের প্যাকেটের গায়ে দাম লেখাই থাকে।সেখান থেকে আপনি প্রতি ইউনিটের দামও বের করতে পারেন। তাই দাম পরিশোধ করার আগে যাচাই করে নিন। সরবরাহকারীকে মূল্য সংক্রান্ত বিষয় জিজ্ঞেস করুন। কোম্পানিগুলো কিভাবে ঔষধের দাম নির্ধারক করে থাকে সে সম্পর্কে ধারনা রাখতে পারেন।

ভালোভাবে সংরক্ষণ পদ্ধতি দেখে নিন:
ঔষধগুলো নিদিষ্ট তাপমাত্রায় বা পরিবেশে সংরক্ষণ বেশ জরুরী। কিছু ঔষধ আছে যেগুলো ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হয় কেননা সূর্যের তাপমাত্রায় এগুলোর কার্যকারিতা কমে আসে বা নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তাপ নয় বায়ুর আদ্রতা ও চাপও ঔষধ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে।
তাই কেনার সময় ভালোভাবে দেখুন ঔষধটি কী অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল এবং বাসায় নিয়ে আবারো সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করুন। প্রয়োজন হলে আবার ফার্মেসীতে জিজ্ঞাসা করে শুনে নিন।

দেখে নিন ঔষধের প্যাকেজিং ঠিক আছে কিনা :
কেনার আগে ছেঁড়া, খোলা বা ফুটোযুক্ত প্যাকেট নেবেন না। কেনার সময় খেয়াল করুন ঔষধের প্যাকেট বা পাতাটি ছেড়া, ফুটোযুক্ত বা খোলা কিনা। এ ধরণের কিছু হলে কিনবেন না। খোলা বা ফাটা, ছেড়া থাকলে ঔষধ পরিবেশের সংস্পর্শে আসতে পারে। দীর্ঘদিন এমন থাকলে ঔষধের কার্যকারীতা কমে বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ঔষধ ব্যবহার বিধি বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন:
প্রেসক্রিপশানে ঔষধের ব্যবহার বিধি লেখাই থাকে। তবুও আরেকবার ঔষধ বিক্রেতার কাছ থেকেও নিশ্চিত হয়ে নিন কখন, ক’বার, খাবার আগে না পরে ঔষধটি খাবেন।

ইচ্ছে মতো ভিটামিন বা অন্য কোন ধরনের ঔষধ নয়:
অনেকেই শরীর দুর্বল লাগলেই নিজে থেকে ভিটামিন /মিনারেল বা অন্যান্য জাতীয় ঔষধ কিনে খেয়ে থাকেন। এটা কখনও করা উচিৎ না। শারীরিক দুর্বলতার অন্য অনেক কারণ থাকতে পারে বা অন্য কোন রোগের কারনেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তার/বিশেষজ্ঞ ফার্মাসিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ঔষধটি খেতে হবে।

এই বিষয় গুলো আমাদের অবশ্যই খেয়ল রাখা উচিত ।

মতামত দিন
Loading...