বি. ফার্ম. প্রফেশনাল কোর্সের অংশ হিসেবে গত ১৪ অক্টোবর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগে অনুষ্ঠিত হয় ৫ম বর্ষ ২য় সেমিস্টার শিক্ষার্থীদের (২০১৭-১৮ সেশন) থিসিস ডিফেন্স ও প্রেজেন্টেশন । উক্ত প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান ও অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. কিশোর মজুমদার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মোঃ রশিদুর রহমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মোহাম্মদ জসীমউদ্দীন এবং প্রভাষক মোঃ নাজমুল হাসান জিলানী। এছাড়া এক্সটার্নাল হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ দিদার-এ-আলম মুহসিন।
শিক্ষার্থীরা গত প্রায় আট মাস ধরে চলা তাদের গবেষণা সবার সম্মুখে উপস্থাপন করেন। গবেষণার মান বৃদ্ধিতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ সর্বদা আপসহীন। এর এই অংশ হিসেবে এবার থিসিস সুপারভাইজারগন তাদের শিক্ষার্থীদের কে নানা ধরনের যুগোপযোগী ও নতুন নতুন বিষয়ের উপর গবেষণার নির্দেশনা প্রদান করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বিভিন্ন গাছের মধ্যে বসবাসকারী এন্ডোফাইট সনাক্তকরণ এবং এদের মেটাবোলাইট কি কি ফার্মাকোলজিকাল ইফেক্ট প্রদান করে তা in vitro, in vivo ও in silico পদ্ধতিতে যাচাই করন, কন্টাক্ট লেন্সের মাধ্যমে কিভাবে ড্রাগ ডেলিভারি করা যায় তা নিয়ে গবেষণা, বিভিন্ন প্রকার ফার্মাসিউটিক্যাল ফর্মুলেশন নিয়ে গবেষণা, সামুদ্রিক প্রাণীর মেটাবলাইট নিয়ে ফার্মাকোলজিক্যাল ইভালুয়েশন, ক্রনিক ডিজিজের পেশেন্টরা তাদের কেয়ারগিভারদের উপরে কতটুকু burden create করে তা নিয়ে গবেষণা, বর্তমানে বাংলাদেশের ডায়াবেটিক রোগীদের লাইফ স্টাইল ও স্যাটিসফেকশন লেভেল এর উপরে গবেষণা কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন এর বুস্টার ডোজ এর প্রভাব নিয়ে গবেষণা, আধুনিক স্বাস্থ্য সেবায় ডিজিটাল হেলথ কার্ড কি কি প্রভাব রাখতে পারে তা নিয়ে গবেষণা, ইত্যাদি।
উক্ত অনুষ্ঠানে ফার্মেসি বিভাগের সম্মানিত চেয়ারম্যান আধুনিক গবেষণার সাথে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য যে আন্তর্জাতিক বাজারে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারার লক্ষ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছরের বি.ফার্ম(প্রফেশনাল) ও ৩টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। সেইসাথে চালু হয়েছে পিএইচডি প্রোগ্রাম। অভিজ্ঞ শিক্ষক মণ্ডলী দ্বারা সর্বোচ্চ শিক্ষা ও ল্যাব সুবিধা দেওয়ার প্রত্যয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ সর্বদা অনড়। এই বিভাগের তিনটি অত্যাধুনিক ল্যাবে ভালোমানের গবেষনা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীবৃন্দ। যবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগে রয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক অভিজ্ঞ, দক্ষ ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকমন্ডলী। অনেকেই বাইরের দেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। খুব দ্রুত আরো কিছু শিক্ষক, শিক্ষিকা উচ্চশিক্ষা শেষ করে এই বিভাগে পুণরায় যোগদান করবেন।
পাবলিক বিশ্বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ফার্মেসী পড়ানো হয় ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, খুলনা, জগন্নাথ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে প্রায় ১৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী ডিগ্রী দেওয়ার অধিকার আছে ।
অন্যসব বিশ্ববিদ্যালয় এর সাথে তালমিলিয়ে বর্তমানে যবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগে গড়ে উঠেছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। এই বিভাগের ল্যাব গুলাতে আছে, অনেক অত্যাধুনিক ইন্সট্রুমেন্ট যেমন HPLC, GC-MS, Amino Acid Analyzer, Freeze Dryer, Rotary Evaporator, Tablet compression machine সহ আরো অনেক কিছু। যেগুলার সাহায্যে প্রতিনিয়ত উন্নত গবেষনা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে MOU হয়েছে বাইরের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় এর সাথে। আধুনিক কারিকুলাম অনুসারে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষণামূলক কার্যক্রম, খেলাধুলা, ডিবেটসহ অন্যান্য সহ শিক্ষা কার্যক্রমে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন এই শিক্ষকমন্ডলি।
গবেষণাকর্মেও বিশেষ নজর দিয়েছেন এই বিভাগ এর বর্তমান চেয়ারম্যান ড. কিশোর মজুমদার । যার কারনে এই ডিপার্টমেন্টেই গড়ে উঠেছে সমৃদ্ধ সেমিনার লাইব্রেরি। দেশে-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণাকর্মে শিক্ষার্থীরা সুনাম কুড়িয়েছেন। শিক্ষকেরাও আন্তর্জাতিক গবেষণাকাজে স্বীকৃতি পেয়েছেন। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নিয়মিত প্রবন্ধ প্রকাশ করে আসছেন। সাহিত্য-সংস্কৃতিচর্চা এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্যও সুনাম কুড়াচ্ছে যবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগ।