ট্রামাডল একটি ওপয়েড ব্যথানাশক (এনালজেসিক) । মাঝারি থেকে মারাত্মক ব্যথা চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত। এটি সেরোটোনিন – নর ঈপিনেফ্রিন রি আপটেক ইনহিবিটার (এসএনআরআই) হিসেবেও কাজ করে।
ট্রামাডল ১৯৬৩ সালে পেটেন্ট করা হয়েছিল এবং ১৯৭৭ সালে পশ্চিম জার্মান ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গ্রেনাথাল জিএমবিএইচ “ট্রামাল” নামে চালু করেছিল। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, এটি যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। এটি জেনেরিক ওষুধ হিসাবে বিশ্বব্যাপী অনেক ব্র্যান্ডের নামে বাজারজাত হয়। বাজারে এটি ট্রামাডল হাইড্রোক্লোরাইড হিসেবে পাওয়া যায় ।
রেচন: মূত্র (95%)
অনসেট অফ অ্যাকশন: এক ঘণ্টার কম
এই সময়ের মধ্যে কাজ করে: ৬ ঘন্টা
জৈব উপলভ্যতা: 70–75% (ওরাল), 77% (রেক্টাল), 100% (IM)
এলিমিনেশন হাফ-লাইফ: 6.3 ± 1.4 h
নির্দেশনা: মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথাজনিত উপসর্গসমূহে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উপসর্গসমূহ নিম্নরূপঃ
অস্ত্রপচার পরবর্তী ব্যথা।
কলিক ও স্পাসটিক ব্যথা।
ক্যান্সারের ব্যথা।
ঘাড় ও পিঠের ব্যথা উপসর্গজনিত ব্যথা।
অষ্টিওপোরোসিস এর উপসর্গজনিত ব্যথা।
সতর্কতা ও যেসব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না:
ট্রামাডলের প্রতি অতি সংবেদনশীল রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা যাবে না। এ ছাড়াও এলকোহল জনিত বিষক্রিয়া, হিপনোটিক, কেন্দ্রিয়ভাবে কার্যকর ব্যথানাশক ওষুধ, অপয়েড অথবা সাইকোট্রোপিক ওষুধ সমূহের সাথেও ট্রামাডল ব্যবহার করা যাবে না। শ্বাস-প্রশ্বাসের হার কমে যাওয়াঃ যখন কোন অবশকারী ওষুধ অথবা এলকোহলের সাথে ট্রামাডল অধিক মাত্রায় ব্যবহার করা হয় তখন শ্বাস-প্রশ্বাসের হার কমে যেতে পারে।
অপয়েড নির্ভরশীলতাঃ অপয়েড ওষুধ সমূহের উপর নির্ভরশীল রোগীদের ক্ষেত্রে ট্রামাডল নির্দেশিত নয়।
স্নায়ুতন্ত্রীয় নিস্তেজকারক এর সাথে ব্যবহারঃ স্নায়ুতন্ত্রীয় ডিপ্রেসেণ্ট ( সি এন এস ডিপ্রেসেণ্ট ) যেমন এলকোহল, অপয়েড, এনেসথেটিক, ফেনোথায়াজিন. ট্রাঙ্কুলাইজার ও সিডেটিভ হিপনোটিক এর সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ট্রামাডল সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য, মাথা ব্যথা, একাকিত্ব, বমি হওয়া, ফুসকুড়ি, স্নায়ুবিক উত্তেজনা, দূর্বলতা ইত্যাদি।
কদাচিৎ সংঘটিত প্রতিক্রিয়াগুলো হচ্ছে- অসুস্থ বোধ হওয়া, এলার্জি বিক্রিয়া, ওজনহীনতা, রক্তনালীর প্রসারণ, পেটে ব্যথা,ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি।
অন্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া: সাধারণভাবে ট্রামাডলের সাথে অন্য ওষুধের পারষ্পরিক বিক্রিয়া নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করার তেমন প্রয়োজন নেই। মনোএমাইন অক্সিডেজ ইনহিবিটরস-ই একমাত্র ওষুধ যা ট্রামাডলের সাথে ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত নয়। কার্বামাজেপিন ও ট্রামাডল একত্রে ব্যবহার করলে ট্রামাডলের বিপাকক্রিয়া উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে যার ফলে ট্রামাডলের মাত্রা বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ও স্তন্যদানকালে ব্যবহার: গর্ভাবস্থায় ট্রামাডলের ব্যবহারের নিরাপত্তা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ট্রামাডল প্লাসেন্টা ভেদ করতে পারে। সুতরাং একান্ত অপরিহার্য না হলে গর্ভাবস্থায় ট্রামাডল ব্যবহার না করাই শ্রেয়। মাতৃদুগ্ধে নিঃসৃত হয় বলে দুগ্ধদানকারী মায়েদের ট্রামাডল হাইড্রোক্লোরাইড গ্রহণ করা উচিত নয়।