প্রেগনেন্সি রিস্ক ক্যাটাগরি

ইউএস এফ ডি এ

0

গর্ভাবস্থায় একটি ঔষধ কতটুকু নিরাপদ / কার্যকর এবিষয়ে একটি মানদণ্ড ঠিক করতে ১৯৭৯ সালে প্রথম US FDA ওষুধের ফাইভ লেটার প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরি চালু করে৷ এই সিস্টেমে ঔষধ গুলিকে, ৫টি ক্যাটাগরি তে ভাগ করা হয়েছে। ক্যাটাগরি গুলো হচ্ছে A,B,C,D এবং X. এছাড়াও যদি কোন ঔষধ একদমই নতুন হয় সেক্ষেত্রে যদি প্রেগনেন্সি রিস্ক প্রোফাইল/ ডাটা না থাকে তবে তাকে N দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।

২০১৫ সালে US FDA প্রেগনেন্সি রিস্ক ক্যাটাগরির এই লেটারিং সিস্টেম পরিবর্তন করে। কিছু ঔষধের ক্ষেত্রে পূর্বের লেটারিং সিস্টেম সমস্যা সৃষ্টি করে এবং চিহ্নিতকরনে সমস্যা সৃষ্টি করে বিধায় US FDA এটি পরিবর্তন করে আধুনিকায়ন করে। নতুন সিস্টেমে এই লেটার বা অক্ষর ভিত্তিক ক্যাটাগরি তুলে দেয়া হয়েছে। প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরির নতুন নিয়মের নাম Pregnancy and Lactation Labeling Rule (PLLR) .এটি ২০১৫ সালের ৩০ জুন থেকে কার্যকর করা হয়।

এই পরিবর্তনের কারন হিসেবে এফডিএ জানায় ” আগের লেটার সিস্টেম কিছু ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিকর। একদম সাধারন একটা সিস্টেম হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে জরুরী অবস্থায় ঔষধ নির্ধারনে বিভ্রান্তি দেখা দেয় ও ঔষধ নিয়ে ভুল ধারণাও তৈরী হতে পারে। বিস্তারিত কোন তথ্য না থাকায় এমন সম্ভাবনা অনেকটাই বেশী। তাই নতুন পদ্ধতি ঠিক করা হয়েছে প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরি নির্ধারনের জন্য।

নতুন পদ্ধতি আগের থেকে অনেকটাই নিরাপদ কারন এতে প্রত্যেকটা ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকবে। তা থেকে  রোগীর অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারন করতে হবে রোগীর ঔষধ।

এবার পূর্বের প্রেগনেন্সি ক্যাটাগরি সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত দেয়া হল।

১) Category A :
এই ক্যাটাগরির ড্রাগ গুলো নিয়ে পর্যাপ্ত এবং নিয়ন্ত্রিত গবেষণা করা হয়েছে। গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যে ভ্রূণের (ফিটাস) উপর কোন রকম ঝুঁকি পাওয়া যায় নি সেই সাথে পরবর্তী ট্রাইমেস্টারেও ঝুঁকি হওয়ার কোনও প্রমাণ নেই।

এই ড্রাগ গুলো গর্ভবতী মায়ের উপর সরাসরি প্রয়োগ করে গবেষণা করা হয়েছে। এবং উক্ত গবেষনার রিপোর্ট প্রমান করেছে- মা এবং তার গর্ভের শিশুর উপর এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব নেই।

এই ক্যাটাগরির ওষুধের উদাহরন levothyroxine, folic acid, liothyronine

২) Category B :
এই ক্যাটাগরির ড্রাগ গুলো কোন হিউম্যান ট্রায়াল (মানুষের উপর পরীক্ষা) হয়নি কিন্তু এনিম্যাল ট্রায়ালে( অন্য প্রাণীর উপর পরীক্ষা) ফিটাসের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়নি ৷

এই ক্যাটাগরির ড্রাগও দেওয়া যেতে পারে গর্ভবতী মায়েদের।

এই ক্যাটাগরির ওষুধের উদাহরন metformin, hydrochlorothiazide, cyclobenzaprine, amoxicillin

৩)Category C :
এই ক্যাটেগরির ড্রাগ গুলো এনিম্যাল স্টাডিতে ( অন্য প্রানীর উপর গবেষণা) এ্যাডভার্স ইফেক্ট (খারাপ ফলাফল) পাওয়া গেছে.(টেরাটোগেনিক / এমব্রায়োডাল/অন্যকিছু) ৷

কিন্তু এই ড্রাগ গুলো নিয়ে কোন হিউম্যান ট্রায়াল (মানুষের উপর পরীক্ষা) করা হয় নি ৷

এই ক্যাটাগরীর ড্রাগ গুলো রিস্ক বেনিফিট রেশিও হিসেব ছাড়া প্রেসক্রাইব করা উচিৎ নয়। অর্থাৎ খারার ফলাফল থেকে ভালো ফল বেশী হলেই কেবল এই ক্যাটাগরির ড্রাগ প্রেসক্রিপশনে লেখা যেতে পারে।

এই ক্যাটাগরির ওষুধের উদাহরন gabapentin, amlodipine, trazodone

৪) Category D :
এই ক্যাটাগরির ড্রাগ গুলো গর্ভাবস্থায় মানব ভ্রুনের ( ফিটাল) জন্য ক্ষতিকর এটা সরাসরি প্রমান পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু এই ক্যাটাগরির ড্রাগ গুলো তখনই কেবল ব্যবহার করা যেতে পারে যখন মা কে বাঁচানোর কোন বিকল্প কোন ঔষধ নেই৷ একদম বিকল্পহীন ( মায়ের জীবন সংকটাপন্ন) অবস্থায়ই কেবল এই ক্যাটাগরির ড্রাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই ক্যাটাগরির ওষুধের উদাহরন losartan

৫) Category X : এই ড্রাগ গুলো সম্পূর্ণ রুপে টেরাটোজেনিক ( ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জম্মাতে পারে). এই ক্যটাগরির ঔষধগুলো গর্ভাবস্থায় সম্পূর্ণ ভাবে নিষেধ।

এই ক্যাটাগরির ওষুধের উদাহরন atorvastatin, simvastatin, methotrexate, finasteride

 

রেফারেন্স 

1. https://www.researchgate.net/figure/FDA-pregnancy-category-classification-for antihistamines_tbl2_237014332
2. https://www.drugs.com/pregnancy-categories.html#previous
3. https://www.fda.gov/drugs/labeling/pregnancy-and-lactation-labeling-drugs-final-rule
4. https://www.fda.gov/drugs/labeling-information-drug-products/questions-and-answers-pregnancy-and-lactation-labeling-rul

মতামত দিন
Loading...